সদ্য সাবেক ডিসিরা পদোন্নতি পাননি
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশাসনিক পদোন্নতির পর অনেক কর্মকর্তার মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে, বিশেষ করে ঈদের আনন্দের আগে। এটি নিয়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক সমালোচনা। নিরপেক্ষ ও যোগ্য কর্মকর্তাদের বাদ দেওয়ার পর, পদোন্নতির তালিকায় উঠে এসেছে আওয়ামী লীগের সরকারের মন্ত্রী-উপদেষ্টাদের পিএস এবং আওয়ামী সুবিধাভোগী কর্মকর্তাদের নাম। ২৪ ব্যাচের কর্মকর্তাদের মধ্যে এতে ক্ষোভ বিরাজ করছে, এবং অন্যান্য ব্যাচের কর্মকর্তাদের মধ্যেও আলোচনা চলছে। এসব তথ্য একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন ১৯৬ জন কর্মকর্তা। এর মধ্যে ২৪তম বিসিএস ব্যাচ থেকে ৩২০ জনের মধ্যে ১৩৭ জন পদোন্নতি পেয়েছেন, আর ১৮৩ জন বাদ পড়েছেন। অন্যান্য ব্যাচের তুলনায় ২৪তম ব্যাচের পদোন্নতি হার মাত্র ৪২ শতাংশ, যা অন্য ব্যাচগুলোর প্রায় ৭০ শতাংশের তুলনায় কম। ইতোমধ্যে পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের পদায়নও করা হয়েছে, বেশিরভাগকে তাদের পূর্ববর্তী দায়িত্বেই (ইনসিটু) রাখা হয়েছে।
পদোন্নতির পর বাদ পড়া কর্মকর্তাদের মধ্যে অন্তত ১০০ জন গতকাল সকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আবদুর রশীদ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমানের সঙ্গে দেখা করে পদোন্নতির বিষয় পুনর্বিবেচনা করার আবেদন জানান। উভয় সচিবই তাদের বিষয়টি পুনরায় দেখার আশ্বাস দিয়েছেন, বলছেন বঞ্চিত কর্মকর্তারা। জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ও সাবেক সচিব এ কে এম আবদুল আউয়াল মজুমদার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, যারা রাজনৈতিকভাবে জড়িত এবং অন্যায় সুবিধা নিয়েছেন, তাদের বাদ পড়া উচিত। তবে যারা ভালো ও পেশাদার ছিলেন, তাদের বাদ দেওয়া ঠিক হয়নি। তিনি বলেন, এক সরকারের অধীনে সব অফিসারকে কাজ করতে হয়, কিন্তু সবাই দলবাজ নয়। তিনি আরও জানান, কিছু ডিসি পদোন্নতি পেলেও অন্যরা বাদ পড়েছেন, যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের প্রাক্তন পিএস আবু সালেহ মোহাম্মদ ওবায়েদুল্লাহ, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের পরিচালক এ কে এম মনিরুজ্জামান, চট্টগ্রামের প্রাক্তন মেয়র আ জ ম নাসিরের পিএস মো. আমিনুর রহমানসহ আরও কয়েকজন বিগত সরকারের মন্ত্রী-উপদেষ্টাদের পিএস ছিলেন। তারা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন এবং কিছু কর্মকর্তা দীর্ঘ সময় একই কর্মক্ষেত্রে ছিলেন। বেশ কিছু কর্মকর্তা, যারা আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী ছিলেন, তাদের পদোন্নতির বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ২৪ ব্যাচের কর্মকর্তারা যারা পিএস বা ডিসি ছিলেন, তারা পদোন্নতি পেয়েছেন, কিন্তু যারা মেধাক্রমে ভালো ছিলেন, তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেকেই।
পদোন্নতি পাওয়ার পর প্রথম কর্মদিবসে, বঞ্চিত কর্মকর্তারা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এবং পরে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে গিয়ে পদোন্নতি পুনর্বিবেচনা করার আবেদন জানান। প্রত্যেকে পৃথকভাবে তাদের আবেদন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছেন।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta