আরেফিন সিদ্দিকের জানাজা ধানমন্ডিতে, দাফন আজিমপুরে
দেশের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে নিবন্ধিত ভ্যাটদাতা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৫ শতাংশেরও কম— এনবিআর
বাংলাদেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারকে ভ্যাট দেয় না, যদিও তারা ভোক্তাদের কাছ থেকে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আদায় করে। এভাবে ভ্যাট আদায় হলেও তা সরকারের খাতে জমা হচ্ছে না। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, দেশের ১ কোটি ১৮ লাখেরও বেশি অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৬৩ লাখের কাছাকাছি স্থায়ী প্রাতিষ্ঠানিক ইউনিট রয়েছে। তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) নিবন্ধিত ভ্যাটদাতা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা মাত্র ৫ লাখ ৭০ হাজার।
দেশের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে নিবন্ধিত ভ্যাটদাতা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৫ শতাংশেরও কম, এবং এর মধ্যে প্রায় ৪ লাখ ৮০ হাজার প্রতিষ্ঠান নিয়মিত রিটার্ন জমা দেয়। এনবিআর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন কারণে ভ্যাট নিবন্ধন বাড়াতে সহযোগিতা করছে না। এনবিআরের কাঠামোগত দুর্বলতা এবং সরকারের রাজস্ব ঘাটতির মধ্যে এ সমস্যা বাড়ছে।
ভ্যাট নিবন্ধনের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য এনবিআর বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে, কিন্তু এখনও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে দেশের ৯৫ শতাংশেরও বেশি প্রতিষ্ঠান ভ্যাটের আওতার বাইরে রয়েছে। বর্তমানে ভোক্তারা বিভিন্ন সেবা ও পণ্য কেনার মাধ্যমে ভ্যাট পরিশোধ করলেও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো এ ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছে না।
অর্থনৈতিক শুমারির তথ্য অনুযায়ী, দেশের স্থায়ী অর্থনৈতিক ইউনিটগুলোর মধ্যে ৯ শতাংশের কিছু বেশি প্রতিষ্ঠানই ভ্যাট নিবন্ধিত। এসব ইউনিটগুলো মূলত স্থায়ী কাঠামোর ওপর প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। ভ্যাট নিবন্ধন বাধ্যতামূলক হলেও, দেশের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান এই বিধি অনুসরণ করছে না, যার ফলে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি সৃষ্টি হচ্ছে।
ভ্যাট নিবন্ধনের জন্য নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী, ৩০ লাখ টাকার নিচে বার্ষিক টার্নওভার থাকলে প্রতিষ্ঠানটিকে ভ্যাট দিতে হয় না, কিন্তু এর বেশি হলে নির্ধারিত হারে ভ্যাট প্রদান করতে হয়। বর্তমানে জুয়েলারি খাতের ৮০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত নয়।
এনবিআর জানিয়েছে, শিগগিরই ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংখ্যা বাড়ানোর জন্য আরও পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এজন্য বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (বিআইএন) বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, এনবিআরের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। ব্যবসায়ী নেতারা এই বিষয়ে এনবিআরের কাঠামোগত দুর্বলতা এবং নীতিগত সমস্যার কথা উল্লেখ করেছেন। ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় ভ্যাট নিবন্ধন বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
এনবিআর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিবিএসের তথ্যে যেসব অর্থনৈতিক ইউনিটের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তাদের সবাই ভ্যাটের আওতায় পড়ে না। অনেক ট্রেডার এবং সেবা প্রদানকারী অনিবন্ধিত থাকে এবং তারা নিবন্ধন নেয়ার ক্ষেত্রে নানা ধরনের কৌশল গ্রহণ করে। এনবিআর শিগগিরই নিবন্ধন বাড়ানোর জন্য কিছু পদক্ষেপের সুফল দেখতে আশা করছে।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta