শনিবার, ১৫রা মার্চ ২০২৫

রমজানে তাহাজ্জুদ পড়ার সুযোগ

রমজানে তাহাজ্জুদ আদায়ের সুযোগ
রমজানে তাহাজ্জুদ পড়ার সুযোগ

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে সবচেয়ে প্রিয় আমল ছিল নামাজ। তিনি নামাজে মানসিক শান্তি খুঁজে পেতেন এবং জীবনের সংকটগুলো এর মাধ্যমে সমাধান করতেন। তিনি বলেছেন, ‘নামাজ আমার চোখের প্রশান্তি।’ (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ৩৯৫০)।

ফরজ নামাজের পর শেষ রাতের তাহাজ্জুদ নামাজ ছিল তাঁর বিশেষ প্রিয়। তিনি বলেন, ‘রমজানের রোজার পর সবচেয়ে উত্তম রোজা মহররমের, আর ফরজ নামাজের পর সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ হলো রাতের নামাজ।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১১৬৩)।

তাহাজ্জুদের নামাজে দাঁড়ালে রাসুল (সা.) গভীরভাবে আল্লাহর স্মরণে নিমগ্ন থাকতেন। এমনকি নিজের কষ্টকেও উপেক্ষা করতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) রাতের নামাজে এত সময় কাটাতেন যে তাঁর পা ফুলে যেত। আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি এত কষ্ট করেন কেন? আল্লাহ তো আপনার সব ভুলত্রুটি ক্ষমা করে দিয়েছেন। তিনি বললেন, তাহলে কি আমি কৃতজ্ঞ বান্দা হব না?’ (বুখারি, হাদিস : ৪৮৩৭)।

তাহাজ্জুদের প্রতি রাসুল (সা.)-এর ভালোবাসার কথা কোরআনেও উল্লেখ আছে। তিনি সারা রাত আল্লাহর ধ্যানে কাটাতেন। আল্লাহ বলেন, ‘হে চাদরাবৃত! আপনি রাতে কিছু অংশ জেগে থাকুন। অর্ধেক রাত বা তার সামান্য কম অথবা বেশি, এবং ধীরস্থিরভাবে কোরআন তিলাওয়াত করুন।’ (সুরা মুজ্জাম্মিল, আয়াত : ১-৪)।

বিশেষত রমজানে তাহাজ্জুদের প্রতি রাসুল (সা.)-এর আগ্রহ আরও বৃদ্ধি পেত। তিনি শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন এবং রাতে ইবাদতে ব্যস্ত থাকতেন। পরিবারের সদস্যদেরও তিনি জাগিয়ে দিতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রমজানের শেষ দশকে রাসুলুল্লাহ (সা.) রাত জেগে ইবাদত করতেন, পরিবারকে জাগাতেন এবং ইবাদতে আরও দৃঢ়তা আনতেন।’ (সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিম)।

সাহাবিরাও তাহাজ্জুদ আদায়ে আগ্রহী ছিলেন। বিশেষ করে রমজানে তাঁদের মধ্যে আরও বেশি উৎসাহ দেখা যেত। যেমন আবু হুরায়রা (রা.)-এর পরিবার পালাক্রমে সারা রাত আল্লাহর ইবাদত করতেন। আল্লাহ কোরআনে বলেন, ‘তারা রাতের খুব সামান্য অংশই ঘুমাত এবং শেষ রাতে ক্ষমা প্রার্থনা করত।’ (সুরা জারিয়াত, আয়াত : ১৭-১৮)।

রাসুলুল্লাহ (সা.) তাহাজ্জুদ ছেড়ে দিতেন না এবং কাউকে তা বাদ দিতে নিরুৎসাহিত করতেন। আবদুল্লাহ বিন আমর (রা.)-এর বর্ণনায় এসেছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘হে আবদুল্লাহ! অমুক ব্যক্তির মতো হয়ো না। সে তাহাজ্জুদ পড়ত, কিন্তু পরে ছেড়ে দিয়েছে।’ (রিয়াদুস সালিহিন)।

আসুন, তাহাজ্জুদ পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলি। যারা সারা বছর এটি আদায় করতে পারি না, তারা অন্তত রমজানে এটি শুরু করি এবং অন্যদেরও উদ্বুদ্ধ করি। আল্লাহ আমাদের এই পথে পরিচালিত করুন। আমিন।

2025-03-03 15:45:05
রমজানে তাহাজ্জুদ পড়ার সুযোগ

বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ
 

প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta

আজকের সর্বশেষ