রোজার সামাজিক গুরুত্ব
রোজা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজ বিধান। এটি শুধুমাত্র ইবাদত ও আমল নয়, বরং এর রয়েছে সামাজিক দিক থেকেও বিশেষ গুরুত্ব। রোজার সামাজিক প্রভাব নিয়ে নিম্নে আলোচনা করা হলো—
১. আদর্শ সমাজ গঠন : রোজা প্রতি বছর তার মহিমা নিয়ে সমাজে শান্তি এবং সাম্য প্রতিষ্ঠা করতে সহায়তা করে। এটি এমন এক নিয়ম, যা একটি সুস্থ ও ন্যায্য সমাজ প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখে।
রোজার মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং একটি নতুন সমাজের জন্ম হয়।
২. সদ্ব্যবহারের শিক্ষা : রমজান মাস পরস্পরের প্রতি সহানুভূতির শিক্ষা দেয়। এই মাসে, খেটে খাওয়া মানুষের প্রতি সদ্ব্যবহার করা হয়। নবী (সা.) বলেছেন, যারা এই মাসে তাদের কর্মীদের বোঝা কমিয়ে দেয়, আল্লাহ তাদের ক্ষমা করবেন এবং দোজখের আগুন থেকে মুক্তি দেবেন।
৩. বিপ্লবী শিক্ষা : রোজা শুধু শরীরের খাবার বর্জন নয়, এটি মানুষের আত্মশুদ্ধির পথে এক বিপ্লবী শিক্ষা প্রদান করে। রোজা রেখে মিথ্যা না বলা, গিবত না করা এসব শিক্ষার মধ্যে পড়ে।
৪. ত্যাগের শিক্ষা : রোজা পালন একজনকে ত্যাগ এবং ধৈর্য শেখায়। এটি একটি কঠিন কর্মসূচি, যার মধ্যে শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতি রয়েছে।
৫. সমবেদনা প্রকাশ : রোজা পালন করে মানুষ অভুক্তদের কষ্ট অনুভব করে। ধনী শ্রেণি দরিদ্রদের দুঃখ-বেদনা বোঝে এবং তাদের প্রতি সহানুভূতি বাড়ায়।
এজন্য, নবী (সা.) রমজান মাসকে সহানুভূতি এবং সহমর্মিতার মাস বলে আখ্যায়িত করেছেন।
৬. সাম্য প্রতিষ্ঠা : রোজা সমাজে সাম্যের মূর্ত প্রকাশ। এতে ধনী-নির্ধন সবাই একযোগভাবে পানাহার বন্ধ করে।
৭. নিয়মানুবর্তিতার প্রশিক্ষণ : রমজান একজনকে নিয়মানুবর্তিতার মধ্যে পরিচালিত করে এবং সঠিক জীবনযাপনের প্রেরণা দেয়। সঠিক সময়ে সাহরি, ইফতার, নামাজ ইত্যাদি মানুষকে অভ্যস্ত করে।
৮. বদভ্যাস দূরীকরণ : রমজান মাসে মানুষ তার খারাপ অভ্যাসগুলো পরিত্যাগ করে। এতে, হিংসা, রাগ, গিবত এবং অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকতে শেখা যায়।
৯. দৈহিক উপকারিতা : রোজা শারীরিকভাবে উপকারী। এটি শরীরের অনেক রোগের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
১০. বিস্ময়কর সফল মাধ্যম : চিকিৎসকরা বলছেন, রোজা দেহের পরিপাক ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং এটি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
১১. পরিচ্ছন্ন সামাজিক জীবন : রোজা পালনের মাধ্যমে একজনের জীবনে এক উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসে। অসামাজিক কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার ফলে সে এক পরিচ্ছন্ন জীবনযাপন করতে শেখে।
১২. ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান হ্রাস : রোজা সমানভাবে ধনী-দরিদ্র সকল মানুষের মধ্যে সম্পাদিত হয়, যা পার্থক্য কমিয়ে আনে।
১৩. মানুষের ষড়রিপু দমন : রোজা শুধুমাত্র খাবারের নয়, এটি অন্যান্য দৃষ্টিতে শরীর ও মনকে শুদ্ধ করে।
১৪. সুস্থ বিবেকের বিকাশ : রোজা শুধু আল্লাহকে সন্তুষ্টির জন্য পালন করা হয়, যা সুস্থ বিবেকের বিকাশ ঘটায়।
১৫. ভ্রাতৃত্ব বন্ধন সুদৃঢ় : রোজার মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্ক, কর্তব্যবোধ ও ভ্রাতৃত্ববোধ জোরদার হয়।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta