মসজিদের ফান্ডের টাকা দিয়ে ইফতার আয়োজন করা সমীচীন কি?
রমজান মাসে দেশের বিভিন্ন মসজিদে ইফতারের আয়োজন করা হয়, যাতে এলাকার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। মসজিদগুলোতে ইফতার আয়োজন অনেক সময় মসজিদ কমিটির উদ্যোগে হয়ে থাকে। কখনো কখনো মসজিদের মুসল্লিদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে ইফতার আয়োজন করা হয়।
তবে মসজিদ ফান্ড থেকে যদি কখনো ইফতার আয়োজন করা হয়, তা কি ঠিক হবে, এ বিষয়ে ইসলামি চিন্তাবিদদের মতামত হলো—
মসজিদের ফান্ডের টাকা শুধুমাত্র মসজিদের খরচের জন্য ব্যবহার করা উচিত, অন্য কোনো কাজে খরচ করা যাবে না। ইফতারের জন্য একটি আলাদা ফান্ড তৈরি করা উচিত। কারণ, এক খাতের দান অন্য খাতে খরচ করা নিষিদ্ধ। (ফাতহুল কাদীর ৬/২৬৮)
হাদিসে এসেছে, উমর রা. একটি খেজুর বাগান ওয়াকফ করতে চাইলে রাসূল (সা.) তাকে বলেছিলেন, তুমি এই সম্পত্তি এভাবে দান করো যে,
لاَ يُبَاعُ وَلاَ يُوهَبُ وَلاَ يُورَثُ، وَلَكِنْ يُنْفَقُ ثَمَرُهُ
এটি বিক্রি করা যাবে না, কাউকে দান করা যাবে না এবং উত্তরাধিকারীও হবে না। তবে এর ফলে পাওয়া ফল ব্যবহার করা যাবে। এরপর উমর রা. তা এভাবে দান করেছিলেন। (সহীহ বুখারী ২৭২৪)
ইফতারের রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব এবং ফজিলত। রোজা শেষে নবী (সা.) ইফতার করতেন। সাহাবারা ইফতার করতেন। আলকামা ইবনে সুফিয়ান ইবনে আবদুল্লাহ সাকাফি তার পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন, ‘আমরা একদিন রাসূল (সা.)-এর সাক্ষাৎ লাভের জন্য আসলাম। তিনি আমাদের জন্য দুটি তাঁবু তৈরি করিয়ে দিয়েছিলেন। বেলাল (রা.) আমাদের জন্য ইফতার নিয়ে আসতেন। আমরা জিজ্ঞেস করতাম, বেলাল, রাসূল (সা.) ইফতার করেছেন? বেলাল (রা.) বলতেন, হ্যাঁ, আমি রাসূল (সা.)-এর ইফতার করার পরই এসেছি এবং আমরাও খেয়ে এসেছি।’ (আল মুজামুল কাবির লিত-তাবরানি, হাদিস : ৪২০০)
রোজা শেষে ইফতার রোজাদারের জন্য এক বিরাট আনন্দের মুহূর্ত। আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবী (সা.) বলেছেন, ‘রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দ। একটি আনন্দ হচ্ছে যখন সে ইফতার করে, আরেকটি হচ্ছে যখন সে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করবে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৭৬৬)
ইফতার করার সময়টি রোজাদারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাসূল (সা.) ইফতারের সময় সম্পর্কে বলেছেন, ‘যখন রাত দিনের শেষ এবং সূর্য ডুবে যায়, তখন রোজাদার তার রোজা খুলে ফেলবে।’ (বুখারি, হাদিস : ১৯৫৪)
শাকিল/সাএ
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta