রমজান প্রার্থনার মাস
মহান আল্লাহর রহমত ও সাহায্য লাভ এবং জীবনের কষ্ট ও বিপদ থেকে আশ্রয় চাওয়ার উপায় হলো দোয়া। হাদিসে দোয়াকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের একটি প্রধান মাধ্যম।
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তোমাদের রব বলেছেন, তোমরা আমার কাছে দোয়া করো, আমি তা কবুল করব। যারা অহংকারের কারণে আমার ইবাদত এড়িয়ে চলে, তারা অবশ্যই অপমানিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’ (সুরা : মুমিন, আয়াত : ৬০)
রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহর কাছে দোয়ার চেয়ে মূল্যবান কিছু নেই। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৮২৯)
তাই রমজান মাসে প্রত্যেক মুমিনের উচিত আল্লাহর কাছে অধিক পরিমাণে দোয়া করা, বিশেষত ইফতারের সময়।
দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি বান্দার নিবেদন পূর্ণতা পায়। বান্দা নিজেকে অসহায়ভাবে আল্লাহর কাছে তুলে ধরে এবং তাঁর করুণা প্রার্থনা করে। আল্লাহ বলেছেন, বান্দা যখন দোয়া করে, তিনি তা শোনেন এবং গ্রহণ করেন।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘(হে নবী) আমার বান্দারা যখন আমার সম্পর্কে জানতে চায়, তখন বলুন, আমি তাদের খুব কাছে। কেউ যখন আমাকে ডাকে, আমি তার দোয়া কবুল করি। সুতরাং তারা যেন আমার আদেশ মেনে চলে এবং আমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, যাতে তারা সঠিক পথে থাকে।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১৮৬)
এই আয়াতটি রমজানের আলোচনার মধ্যেই এসেছে। ইমাম ইবনে কাসির (রহ.) বলেছেন, এতে রোজার পর দোয়া কবুল হওয়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। তাই ইফতারের সময় দোয়া করা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, তিন ধরনের ব্যক্তির দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না— ১. রোজাদার যখন ইফতার করে, ২. ন্যায়পরায়ণ শাসক এবং ৩. মজলুমের দোয়া।
মজলুমের দোয়া আল্লাহ আকাশে পৌঁছে দেন এবং সব দরজা তার জন্য খুলে দেন।
আল্লাহ বলেন, ‘আমার সম্মানের কসম! আমি অবশ্যই তোমাকে সাহায্য করব, যদিও তা কিছু সময় পরে হয়।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৯৮)
আরেক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক রোজাদারের ইফতারের সময় একটি দোয়া থাকে, যা অবশ্যই কবুল করা হয়।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৭৫৩)
এছাড়াও সাহরির সময়ও দোয়ার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘যারা ধৈর্যশীল, সত্যবাদী, আনুগত্যশীল, দানশীল এবং শেষ রাতে ক্ষমা প্রার্থনাকারী।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৭)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ প্রতি রাতের শেষ ভাগে পৃথিবীর নিকটবর্তী আকাশে এসে ডাক দেন, কে আমাকে ডাকবে? আমি তার ডাকে সাড়া দেব। কে আমার কাছে চাইবে? আমি তাকে দেব। কে ক্ষমা চাইবে? আমি তাকে ক্ষমা করব।’ (বুখারি, হাদিস : ১১৪৫)
তাই রমজানে প্রতিটি রোজাদারের উচিত সাহরি ও ইফতারের সময় অধিক পরিমাণে দোয়া করা, তাওবা-ইস্তেগফার করা এবং আল্লাহর রহমত কামনা করা।
বিডি প্রতিদিন/মুসা
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta