হাসপাতাল ক্যাম্পাস হয়ে উঠেছে একটি দর্শনীয় স্থান!
একটি প্রচলিত কথা রয়েছে, মানুষ সাধারণত বিপদে না পড়লে হাসপাতাল কিংবা থানায় যায় না। তবে এই ক্ষেত্রে ভিন্ন একটি চিত্র দেখা যাচ্ছে। অনেক মানুষ চিকিৎসা ছাড়াও হাসপাতাল ক্যাম্পাসে আসছেন। তাদের অনেকেই ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে বারবার এখানে আসছেন। এখানে এখন সূর্যমুখী ফুল, বিভিন্ন ধরনের সবজি ও ফল চাষ হচ্ছে। আগে এখানে সরিষার চাষও করা হয়েছিল। এই দৃশ্যটি কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে অবস্থিত। এর ডান পাশে রয়েছে ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। হাসপাতালের প্রবেশ পথে বামদিকে প্রায় এক বিঘা জমির ওপর সূর্যমুখীর বাগান দেখা যাচ্ছে। সূর্যমুখীর বড় বড় ফুলগুলো দেখে মনে হচ্ছে যেন জমির মধ্যে সূর্যের আলোর মেলা বসেছে। বাগানের পাশে রোগী, তাদের আত্মীয় ও স্থানীয়রা ঘুরে দেখছেন। কেউ ছবি তুলছেন, কেউ সেলফি নিচ্ছেন। গত বছর এখানে সরিষার চাষ হয়েছিল। হাসপাতালের পিছনের অংশে রয়েছে ফুল, সবজি, ফল এবং বিভিন্ন ধরনের গাছ। সবজি বাগানে বাঁধাকপি, ফুলকপি, টমেটো, লাউ, কুমড়া ও মরিচের গাছ রয়েছে। এছাড়া আম, কাঁঠাল, কলা, পেপে ও অন্যান্য ফলের গাছও আছে। হাসপাতালের কর্মকর্তা ও অন্যান্য কর্মীরা অবসর সময় এখানে জমির পরিচর্যা করেন। পুকুর পাড়ে দেবদারু ও সুপারিসহ বিভিন্ন গাছ রয়েছে।
গুণানন্দী গ্রামের রোগী ফাতেমা আক্তার লিজা ও শ্রীভল্লবপুর এলাকার রোমান হাওলাদার বলেন, আমরা এখানে চিকিৎসার জন্য এসেছি। হাসপাতালের সেবার মান খুব ভালো এবং পরিবেশও চমৎকার। বিশেষ করে ফুল ও সবজির বাগান দেখলে মন ভরে যায়। তবে এক্সরে, আল্ট্রাসনোগ্রামসহ কিছু পরীক্ষার সংকট রয়েছে।
স্থানীয় উত্তর রামপুর গ্রামের আবুল হোসেন বলেন, গত দুই বছর ধরে হাসপাতালের চেহারা অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে। অবসর সময় কাটাতে প্রায়ই হাসপাতালে চলে আসি। এখানে ফুল ও সবুজ গাছের মধ্যে সময় কাটানো বেশ ভালো লাগে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন বলেন, আমাদের কিছু পরিত্যক্ত জমি ছিল। আমরা ভাবলাম, যদি পারিপার্শ্বিক পরিবেশ ভালো রাখা যায়, তবে রোগীকে ভালো রাখার সম্ভাবনা বেশি থাকবে। তাই জমি ভরাট করে ফুল, ফল ও সবজির চাষ শুরু করেছি।
উপজেলা কৃষি অফিসার জোনায়েদ কবির খান বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কিছু খালি জমি ছিল, যা প্রায় জঙ্গল হয়ে গিয়েছিল। তারা গতবার সরিষা ও সবজির চাষ করেছিলেন। এবার সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে। আমরা তাদের পরামর্শ ও বীজ দিয়ে সাহায্য করেছি। তাদের এই উদ্যোগটি প্রশংসনীয়।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta