দেশে গরুর লাম্পি স্কিন টিকা উদ্ভাবন, খরচ হবে ৭০ টাকা
লাম্পি স্কিন ডিজিজ মূলত গরু ও মহিষের মধ্যে হয়ে থাকে, যার ফলে পশুর চামড়ায় ফোসকা সৃষ্টি হয়। ২০১৯ সালে দেশে শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এটি বর্তমানে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি একটি ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগ, এবং এর কার্যকর চিকিৎসা ছাড়া কেবল টিকাই একমাত্র প্রতিকার।
বিদেশ থেকে আমদানি করা টিকার প্রতি পিসের দাম ২৫০-৩০০ টাকা পড়লেও, বর্তমানে দেশে প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) নতুন টিকা উদ্ভাবন করেছে, যার খরচ হবে প্রায় ৭০ টাকা। এই টিকাটি কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে।
মঙ্গলবার বিএলআরআই-এর বাস্তবায়িত ‘জুনোসিস ও আন্তঃসীমান্তীয় প্রাণিরোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ গবেষণা’ প্রকল্পের আওতায় উদ্ভাবিত লাম্পি স্কিন ডিজিজ ভ্যাকসিন সিড হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
ফরিদা আখতার প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘দেশের চাহিদা পূরণের পর ভবিষ্যতে এই টিকা রফতানি করা হবে। লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) বিষয়ে খামারিদের সচেতন করার পাশাপাশি প্রতিষেধক উৎপাদনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। গবাদি পশুর এ রোগে কী পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে তা দ্রুত নিরূপণ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নতুন নতুন রোগের সৃষ্টি হচ্ছে, এবং এ জন্য সরকার বিজ্ঞানীদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে প্রস্তুত। আক্রান্ত গরুর মাংস খেলে মানুষের ওপর এর কোনো প্রভাব পড়বে কি না, তা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের নিশ্চিত করতে হবে, এবং এলএসডি রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য কাজ করতে হবে।’
বক্তারা বলেন, প্রতি বছর লাম্পি স্কিন ডিজিজের কারণে প্রাণিসম্পদ খাতে ব্যাপক আর্থিক ও বাণিজ্যিক ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া বিদেশি টিকা আমদানি অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং সেগুলোর বাজারে অভাব রয়েছে। এই রোগে গড়ে প্রতিটি গরুর ১২ হাজার টাকারও বেশি ক্ষতি হচ্ছে, ৫-১০ শতাংশ মৃত্যুহার এবং পশুর ওজন কমে যাওয়ার পাশাপাশি দুধ উৎপাদনও হ্রাস পাচ্ছে। দেশব্যাপী প্রায় ৩০ শতাংশ গরু-মহিষ এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। ফলে ক্ষুদ্র খামারিরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
বিএলআরআইয়ের মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুকের সভাপতিত্বে, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আমেনা বেগমসহ অন্য কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta