কক্সবাজারে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, পানিবন্দি দুই হাজার পরিবার
টেকনাফে টানা ভারী বর্ষণের ফলে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে উপজেলাজুড়ে প্রায় ৫০টিরও বেশি গ্রাম পানিতে ডুবে গিয়ে দুই হাজারের মতো পরিবার পানি ঘেরা অবস্থায় দিন পার করছে।
গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে একটানা বর্ষণে বিভিন্ন এলাকায় হাঁটু পর্যন্ত পানি জমে গেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত কক্সবাজারে ১৪৬ মিলিমিটার ও টেকনাফে ১৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে, যা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ।
টেকনাফের ছয়টি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার ৫০টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে হোয়াইক্যংয়ের আটটি, হ্নীলা ইউনিয়নের ১২টি, পৌরসভার সাতটি, সদর ইউনিয়নের ছয়টি, সাবরাংয়ের আটটি ও বাহারছড়ার অন্তত ১০টি গ্রাম বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
হ্নীলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জানান, পূর্ব রঙিখালী এলাকায় পরিস্থিতি সবচেয়ে করুণ এবং প্রায় ৩০০ পরিবার পানিতে আটকা পড়েছে। খাল দখলের কারণে পানি সরে যেতে পারছে না, তবে পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, ঘরে কোমরসমান পানি উঠে গেছে। রান্না করতে না পারায় শিশুরা কষ্টে রয়েছে। এছাড়া কিছু এলাকায় সাপের উপদ্রব বেড়েছে, যা পরিস্থিতি আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।
সাবরাং ইউনিয়নের ইমন আহমদ জানান, পাঁচদিনের লাগাতার বৃষ্টিতে নিচু এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। অনেক পরিবার রান্না করতে না পারায় না খেয়ে রয়েছে এবং ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছে।
হোয়াইক্যংয়ের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ আনোয়ারী বলেন, তার ইউনিয়নের নিচু এলাকাগুলো তলিয়ে গেছে এবং পাহাড়ঘেঁষা বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে মাইকিং করা হচ্ছে।
টেকনাফ ইউএনও শেখ এহসান উদ্দিন জানিয়েছেন, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে এবং জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে শুকনো খাবার সরবরাহের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রও খোলার পরিকল্পনা রয়েছে।
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছে, জলাবদ্ধতার পেছনে খাল দখল, অপরিকল্পিত পাহাড়ি বসতি এবং দুর্বল অবকাঠামোই দায়ী। তারা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় খাল উদ্ধার ও কার্যকর ড্রেনেজ ব্যবস্থা গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta