যেন একাই যুদ্ধ করেছিলেন হামজা, ভারতে ড্র নিয়ে ফিরল বাংলাদেশ
প্রিমিয়ার লিগে খেলা হামজা দেওয়ান চৌধুরি নিজের অভিষেক ম্যাচে একদম শক্তিশালী পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন। প্রথমার্ধে মিডফিল্ড ও আক্রমণভাগে দারুণ গতিতে খেললেও বিরতির পর তপু বর্মণের অনুপস্থিতিতে তাকে সেন্টার ব্যাকে খেলানো হয়। সেখানেও সফল ছিলেন। অন্যদিকে, অবসর ভেঙে ফিরলেও সুনীল ছেত্রীকে বাংলাদেশ তেমন সুযোগই দেয়নি। ফলে ভারতের মাঠ থেকে গোলশূন্য ড্র নিয়ে ফিরতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।
কনকনে বাতাস এবং ঘাসে জমা কুয়াশার মধ্যে জওহরলাল নেহেরু স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে ভারতীয় সমর্থকদের উল্লাস ‘ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়া’ স্লোগানে গ্যালারি গরম করে রাখলেও, ভারত গোল করতে ব্যর্থ হয়। বাংলাদেশের একটি সুবর্ণ সুযোগ কাজে লাগাতে না পারায় ম্যাচটি গোলশূন্য ড্রতে শেষ হয়।
বাংলাদেশের জার্সিতে হামজা চৌধুরির অভিষেক হয়েছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা হামজা। প্রথম ম্যাচেই তিনি দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন। কোথায় বল, সেখানেই ছিলেন তিনি। রক্ষণে যেমন অবিচল, আক্রমণে তেমনি সহায়ক। বাংলাদেশের কর্নারগুলোও তিনি নিয়েছেন। হামজার থ্রু পাসগুলো ভারতের রক্ষণে ত্রাস সৃষ্টি করেছে এবং প্রতিপক্ষের সঙ্গে বল দখলের লড়াইয়ে তিনি বেশিরভাগ সময়ই জিতেছেন। হামজার ট্রেডমার্ক স্লাইডিং ট্যাকলে ভারতের আক্রমণ ভেস্তে গেছে।
হামজার উজ্জ্বল দিনে ভারতীয় ফুটবল কিংবদন্তি সুনীল ছেত্রী ছিলেন নিষ্ক্রিয়। তিনি বাংলাদেশের গোলরক্ষক মিতুল মারমাকে খুব একটা পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি। কিছু সময় বল পেয়ে খোলামেলা শট নিতে ব্যর্থ হন। এর পর ভারতীয় কোচ মার্কোস তাকে ৮১ মিনিটে তুলে নেন।
ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগটা মিস করেছে বাংলাদেশ। ম্যাচের প্রথম মিনিটেই ভারতের গোলরক্ষক বিশাল কেইত বাংলাদেশের ফরোয়ার্ড জনির কাছে বল দিয়ে দেন। জনি একেবারে খালি পোস্ট পেলেও, সাইড জালে শট মারেন। কিছুক্ষণ পরে, হামজার কর্নারে ভারতীয় গোলরক্ষক বল সেভ করলেও আবার বল পোস্টের দিকে চলে যায়। বাংলাদেশের হৃদয়ের শট ভারতীয় ডিফেন্ডার গোললাইন থেকে ক্লিয়ার করেন। ২২ মিনিটে চোটে পড়ে মাঠ থেকে বেরিয়ে যান বাংলাদেশ অধিনায়ক তপু বর্মণ। এতে রহমত মিয়া আর্মব্যান্ড পরে মাঠে নামেন।
প্রথমার্ধে বাংলাদেশ বল পজেশন ও আক্রমণে ভারতকে ছাড়িয়ে যায়। ৪১ মিনিটে জনি একান্ত গোলের সুযোগ পেয়েও গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে পারেননি। ৩১ মিনিটে ভারতের গোলরক্ষকের বাড়ানো বল ধরে বাংলাদেশের ডিফেন্ডার গোললাইনে দুর্দান্ত সেভ করেন। ফিরতি বল থেকে ভারতের ফুটবলাররা গোল নিতে ব্যর্থ হন, ফলে মিতুল গোল সেভ করতে কোনো সমস্যায় পড়েননি।
দ্বিতীয়ার্ধে ভারতের আক্রমণ তীব্র হয়। ৫৫ মিনিটে লিস্টন কোলাসোর ক্রসে সুনীল ছেত্রী যদি মাথা ছুঁয়ে দেন, তবে গোল হতে পারতো। বাংলাদেশের গোলরক্ষক মিতুল সেই সময়ে পরাস্ত হয়ে পড়েন। এরপর ভারত একাধিক কর্নার আদায় করে, কিছুটা আক্রমণ তীব্র হয়। এই সময় হামজা রক্ষণে বেশী সময় কাটান।
৬০ মিনিটে বাংলাদেশ শাহরিয়ার ইমন ও জনির পরিবর্তে চন্দন রায় ও ফয়সাল আহমেদ ফাহিমকে মাঠে নামায়। ৭৫ মিনিটে রাকিবের থ্রু বল পেয়ে ফাহিম গোলের সুযোগ পেয়েও মিস করেন। দুই মিনিট পরে, হ্যাভিয়ের দুই সোহেল রানাকে একসঙ্গে মাঠে নামান হৃদয় ও মোরসালিনের জায়গায়। একাধিক খেলোয়াড় পরিবর্তন করলেও, কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা ম্যাচের ফল পরিবর্তন করতে পারেননি।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta