পদ লাভের পর স্ত্রীকে জোর করে ডিভোর্স দিলেন জাবি ছাত্রদল নেতা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রদলের কমিটিতে পদায়নের পর স্ত্রীকে জোরপূর্বক ডিভোর্স দিয়েছেন শাখা ছাত্রদলের এক নেতা। অভিযুক্ত আব্দুল্লাহ আল অন্তর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ সেশনের (৪৬ ব্যাচ) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটিতে ২ নম্বর সদস্য হিসেবে আছেন। শাখা ছাত্রদলের পরবর্তী কমিটিতে বড় পদ পাওয়ার জন্য তিনি পরকীয়ার মিথ্যা অভিযোগ তুলে স্ত্রীর কাছ থেকে জোরপূর্বক ডিভোর্স নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগী নারী।
ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের জুন মাসে আনিকা ও অন্তরের বিয়ে হয়। পড়াশোনা শেষে চাকরি পেলেই অন্তর আনিকাকে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে অন্তরের আচরণে পরিবর্তন আসে। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্রদল রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার পর এই পরিবর্তন আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তিনি ধীরে ধীরে আনিকার থেকে দূরত্ব বাড়াতে থাকেন এবং একপর্যায়ে ডিভোর্সের জন্য চাপ দেন। পরে, ১১ মার্চ পরকীয়ার মিথ্যা অভিযোগ তুলে আনিকাকে জোরপূর্বক ডিভোর্স দেন বলে দাবি করেছেন আনিকা।
ভুক্তভোগী আনিকা বলেন, অন্তর আমাকে বিয়ে করেছিল শুধু টাকার জন্য। আমি প্রায় দুই বছরে তাকে প্রচুর টাকা দিয়েছি, তার ক্যারিয়ার গড়তে তাকে প্রথমে ৩০ লাখ এবং পরবর্তীতে ৫০ লাখ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আচরণে কোনো পরিবর্তন আসেনি। অন্তরের পরিবারও আমাকে কোনো সমর্থন দেয়নি, বরং তারা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে।
তিনি আরও বলেন, আমি সামাজিকভাবে অপমানিত হয়েছি এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। তার পরিবার সুবিধাবাদী, যেই সরকার ক্ষমতায় থাকে, তারা সেই দলের সঙ্গেই থাকে। আমাকে ডিভোর্স না দিলে সে ছাত্রদলে সুবিধা পাবে না বলে মিথ্যা অভিযোগ এনে আমাকে ডিভোর্স দিয়েছে।
আনিকার মা সাহিদা বেগম জানান, অন্তর জুলাইয়ে শেষবার তাদের বাড়িতে এসেছিল। এরপর থেকে তার সঙ্গে আর যোগাযোগ হয়নি। কয়েক দিন আগে তাকে ফোন করলে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় গালিগালাজ করে। আমার কণ্ঠের অডিও এডিট করে গালির অডিও বানায়। সর্বশেষ দু'দিন আগে জোরপূর্বক প্রভাব খাটিয়ে আমার মেয়েকে ডিভোর্স দিয়েছে।
ক্যাম্পাস ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল্লাহ অন্তর জোরপূর্বক ডিভোর্সের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমাদের দুই পরিবার একসঙ্গে বসে আদালতের মাধ্যমে ডিভোর্স সম্পন্ন করেছে, জোরপূর্বক ডিভোর্সের ঘটনা ঘটেনি। ডিভোর্সের পর আমার সম্মান নষ্ট করার জন্য এই অভিযোগগুলি করা হচ্ছে। তিনি এলাকায় ছাত্রলীগ করার বিষয়ও অস্বীকার করেন এবং জানান যে তার নামে দুইটি মামলা রয়েছে।
বিআরইউ
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta