শরীরে বালতি বাঁধা, হাতে ওয়াইপার, আকাশছোঁয়া ভবনে প্রবাসীর লড়াই
যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম আকর্ষণীয় দেশ হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। দুবাই, তার আধুনিক শহর যা বিশ্বব্যাপী পরিচিত। শহরের আকাশচুম্বী ভবনগুলো পৃথিবীজুড়ে মানুষকে মুগ্ধ করে, কিন্তু এসব ভবন চকচকে রাখতে যারা কঠোর পরিশ্রম করছেন, তাদের সংগ্রাম কাহিনীও সত্যিই কঠিন।
এরা যাঁরা আকাশ ছোঁয়া ভবনে শরীরে বালতি বেঁধে, হাতে ওয়াইপার দিয়ে কাজ করেন। দুবাই শহরের এই উঁচু উঁচু ভবনগুলোর কাচ পরিষ্কার করার কাজ করে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি। এরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন, আর সেই কাজের মাধ্যমে আয় করছেন রেমিট্যান্স।
দুবাই আসার আগেও তারা মরুভূমি, উটের সারি, পাহাড়ি বালির জমি দেখে অভ্যস্ত ছিলেন। তবে এখন তারা পরিবর্তিত দুবাই শহর দেখছেন, যেখানে ঝুঁকিপূর্ণ কাজের মাধ্যমেই তাদের জীবন চলে।
এমনই একজন প্রবাসী, মোহাম্মদ শরীফ আহমেদ। তিনি জানান, পাঁচ বছর আগে দুবাই এসেছিলেন। প্রথম দিকে এত উঁচু বিল্ডিং দেখলে ভয় লাগতো। কিন্তু তিন বছর আগে একটি রোফ এক্সেস কোম্পানিতে কাজ শুরু করার পর এই ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করেন। আজ আর ভয় পান না, উঁচু ভবনের সৌন্দর্য উপভোগ করেন। কিন্তু মাঝে মাঝে ভাবেন, যদি দুর্ঘটনা ঘটে, তাহলে তার পরিবার কীভাবে চলবে? তিনি পরিবারের একমাত্র রোজগেরে।
বাতাসের গতি বেড়ে গেলে কখনো কখনো কাজ বন্ধ রাখতে হয়, তারপর আবার রশি ধরে উপরে উঠতে হয়। দীর্ঘ ৪ বছর ধরে সিলেটের নুরুল ইসলাম একটি বহুতল ভবনের জানালা পরিষ্কার করছেন। তাঁর কাজ এখন আর ভয় বা উত্তেজনার বিষয় নয়।
অন্য একজন নাঈম ইসলাম জানান, তাদের পরিবারে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার ঋণ ছিল এবং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন। তাঁদের কর্মস্থল নানা ধরণের বহুতল ভবন, অফিস, হোটেল কিংবা হাসপাতাল। বেতন কম হলেও পরিবারের মুখে হাসি আর রেমিট্যান্স পাঠানোই তাঁদের সান্ত্বনা।
আবুধাবির বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, বিদেশে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে কর্মীদের দক্ষতা বাড়াতে হবে।
অভিজ্ঞ প্রবাসীরা বলেন, দক্ষ কর্মীরা তুলনামূলক ভালো বেতনে কাজ পান, তবে অনভিজ্ঞ কর্মীরা কম বেতনে কাজ করেন এবং কর্মসংস্থানও অনিশ্চিত থাকে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta