ভয়ে রয়েছেন এনবিআর কর্মকর্তারা
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের কর্মসূচি শেষ হলেও এখনো তাদের মধ্যে উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে আছে। প্রতিদিন নতুন করে কোনো না কোনো খারাপ খবরের মুখোমুখি হতে হচ্ছে কর্মকর্তাদের। কখন যে কে বাধ্যতামূলক অবসর, বরখাস্ত, বদলি কিংবা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তের আওতায় পড়েন, তার নিশ্চয়তা নেই। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি ও মহাসচিবের নামও দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। এখন পর্যন্ত দুদকের তালিকায় ১৬ জন কর্মকর্তার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। একই সঙ্গে নিয়মিত বদলি ও বরখাস্তও চলছে।
আন্দোলন বন্ধের এক সপ্তাহ না যেতেই দুদক ১৬ জন এনবিআর কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে। এ সময়ের মধ্যে এনবিআর ছয় কর্মকর্তাকে বদলি এবং পাঁচজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে। সরকারের এমন পদক্ষেপে রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক বেড়েছে। আন্দোলনে অংশ নেওয়া অনেকে তাদের ফেসবুক প্রোফাইল নিষ্ক্রিয় করে ফেলেছেন, পুরোনো পোস্ট মুছে ফেলেছেন এবং প্রোফাইল ছবি বদলে ফেলেছেন।
এনবিআরের একাধিক সূত্র জানায়, আরও কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অবসরে পাঠানোর জন্য তালিকা তৈরি হচ্ছে। একই সঙ্গে কিছু কর্মকর্তার বদলি বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। আন্দোলনে জড়িতদেরই প্রাথমিকভাবে টার্গেট করা হচ্ছে। ২৮ ও ২৯ জুন যাঁরা কর্মস্থলে ছিলেন না, তাদের তালিকাও চাওয়া হয়েছে। এনবিআরের সাবেক এক চেয়ারম্যান বলেন, ‘মার্চ ফর এনবিআর করবে জনগণ, কর্মকর্তাদের আন্দোলন অযৌক্তিক। এখন যারা তদন্তের ভয়ে আছেন, তারাই দেশের রাজস্ব ব্যবস্থায় আতঙ্ক সৃষ্টি করেছেন। ফলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হুমকিতে পড়েছে।’
দুদকের তথ্যে বলা হয়েছে, এনবিআরের কিছু সাবেক ও বর্তমান সিনিয়র কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শুল্ক, ভ্যাট ও আয়কর আদায়ে দুর্নীতি, আত্মীয়প্রীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তদন্ত চলছে। এনবিআরের আন্দোলন বন্ধে ব্যবসায়ী নেতারা মধ্যস্থতা করেন। বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, ‘পরিস্থিতি যেন আরও জটিল না হয়, সে জন্য এনবিআর চেয়ারম্যান ও অর্থ উপদেষ্টাকে চিঠি দেব।’ মে ও জুন মাসে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রতিষ্ঠানটির সংস্কার ও চেয়ারম্যান অপসারণের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। দেশের বিভিন্ন কাস্টমস অফিস ও বন্দর বন্ধ রেখে ২৮ ও ২৯ জুন তারা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ও ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি পালন করেন। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এসব কার্যক্রম চলে। পরে ব্যবসায়ীদের হস্তক্ষেপে ২৯ জুন আন্দোলন স্থগিত করা হয়।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta