নারীর একাধিক পুরুষ বন্ধু থাকলে তাকে চরিত্রহীন বলে বিবেচনা করা হয়: ঋতুপর্ণা
পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত আবারও সামাজিক বাস্তবতা নিয়ে নিজের মতামত তুলে ধরলেন। সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত তার নতুন সিনেমা ‘ম্যাডাম সেনগুপ্ত’–এর প্রচারণা করতে গিয়ে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “যখন একটি নারী একাধিক পুরুষ বন্ধুর সঙ্গে মেলামেশা করেন, তখন সমাজ তাকে চরিত্রহীন মনে করে। তবে যদি একজন পুরুষের অনেক নারী বন্ধু থাকে, তাহলে সেটি সম্মানের চোখে দেখা হয়।”
সাক্ষাৎকারে তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা এখনো সমাজে পুরুষ ও নারীর মধ্যে বন্ধুত্বকে সঠিকভাবে মেনে নিতে পারি না। এমনকি আমাদের কাজের ক্ষেত্রেও আমরা দেখি, এক অভিনেত্রী হিসেবে আমাদের বেশিরভাগ সময় পুরুষ সহকর্মীদের সঙ্গে কাজ করতে হয়—যেমন চিত্রগ্রাহক, টেকনিশিয়ান বা পরিচালক। এ কারণে স্বাভাবিকভাবেই অনেক পুরুষের সঙ্গে পেশাগত বন্ধুত্ব তৈরি হয়। কিন্তু সমাজ এখনও সেটি সহজভাবে গ্রহণ করতে পারেনি।”
ঋতুপর্ণা মনে করেন, বন্ধুত্বের কোন লিঙ্গের বাধা নেই। তিনি বলেন, “আমার অনেক পুরুষ বন্ধু আছেন, যারা সম্পাদক, নির্মাতা কিংবা শিল্পী। এই সম্পর্কগুলো একেবারে পেশাগত এবং মানবিক। কিন্তু সমাজ এখনও নারীর স্বাধীনতা এবং সম্পর্কের বহুমাত্রিকতা সহজভাবে মেনে নিতে পারেনি।”
তিনি আরও বলেন, “অনেক সময়, একজন অভিনেত্রী একাধিক সিনেমায় কাজ করলে তার সঙ্গে বিভিন্ন গুঞ্জন ছড়ায়। ধরে নেওয়া হয়, তার পরিচালক বা প্রযোজকের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক থাকার কারণে তিনি কাজ পাচ্ছেন। নারী ও পুরুষের বন্ধুত্ব মানে যে সেখানে শারীরিক সম্পর্ক থাকবে—এমন দৃষ্টিভঙ্গিই সমাজকে পিছিয়ে রাখছে।”
ঋতুপর্ণার এই বক্তব্য আবারও পুরুষতান্ত্রিক সমাজের সেই পুরানো মানসিকতাকে সামনে নিয়ে এসেছে, যেখানে নারীর ব্যক্তিগত পছন্দ বা সম্পর্ককে স্বাধীনভাবে দেখতে সঠিক মনোভাবের অভাব রয়েছে। ‘ম্যাডাম সেনগুপ্ত’ সিনেমায়ও এরকম একটি পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে একটি বিবাহিত নারী এবং তার পুরুষ বন্ধুর বন্ধুত্ব কীভাবে বিভিন্ন সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিতে আক্রান্ত হয়।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta