কথাবার্তা হিসাব করে বলুন, যাতে আমাদের বে-হিসাবি কথা না হয়।
নির্বাচন বিলম্ব ইস্যুতে কিছু রাজনৈতিক দলের দিকে ইঙ্গিত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, আওয়ামী লীগ মনে করেছিল যে, দেশটা তাদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি। ফলে তাদের মনমতো যা খুশি তাই করা হয়েছে। আপনারাও কি তাই মনে করেন? এই বাংলাদেশ কারও একক সম্পত্তি নয়, এটি জনগণের। তাই কথা বলার সময় হিসাব করে বলুন, যাতে আমাদের বে-হিসাবি কথা না বলতে হয়।
বুধবার (১২ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর শাহজাহানপুরে দলের একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় এমন সতর্কতা উচ্চারণ করেন তিনি। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে শাহজাহানপুর রেলওয়ে অফিসার্স ক্লাব মাঠে ‘রাষ্ট্র কাঠামোর মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।
নির্বাচন বিলম্ব বিষয়ে কিছু রাজনৈতিক দলের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্র, কথা বলার অধিকার এবং ভোটের অধিকারের জন্য আমাদের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছি। আজ যখন ভোটের সময় আসছে, তখন বলা হচ্ছে, এটি না করলে ভোট হবে না, ওটা না করলে ভোট হবে না… কেন ভাই? কেন?
মির্জা আব্বাস বলেন, কিছু রাজনীতিবিদ ও রাজনৈতিক দল আছেন যারা শুধুমাত্র বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা করে, কার্যকর কোনো বিরোধিতা নয়। এই দলগুলো শুরু থেকে আজ পর্যন্ত শুধু বিরোধিতা করেই এসেছে। তাদের মধ্যে দেশপ্রেমের একদম শূন্যতা রয়েছে। তারা দেশকে ভালোবাসে না, দেশের মানুষকেও ভালোবাসে না।
‘যেভাবেই হোক ক্ষমতায় থাকতে হবে, যেভাবেই হোক ক্ষমতায় যেতে হবে- এটিই তাদের উদ্দেশ্য। আমাদের কোনো আপত্তি নেই, দেশের জনগণ যদি তাদের ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনেন, তাহলে সমস্যা কী? তবে কেন ভোট থেকে ভয় পায়, নির্বাচন থেকে কেন ভয় পায়?’
নির্বাচন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর নাম উল্লেখ না করে বিএনপির এই নেতা বলেন, যারা দীর্ঘদিন ধরে বলছেন, নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না, তাদের বলি, এক মাসে বিএনপির ৪২২ জন নেতা-কর্মী শাহাদতবরণ করেছেন, শহীদ হয়েছেন। আপনাদের মধ্যে কয়জন শহীদ হয়েছেন?
মিডিয়ার সমালোচনা করে মির্জা আব্বাস বলেন, আমাদের সাংবাদিক ভাইরা এখন অনেক দলের কথা লিখে না, অনেক দলের খারাপ কথা তারা লেখে না, ভালো কথা হয়তো এক-দুইটা লিখে। কিন্তু বিএনপির ভালো কথা তারা লেখে না। খারাপ কিছু লিখে দেয়।
তিনি বলেন, “সব পাখি মাছ খায়, দোষ করে মাছরাঙ্গা।” এখন বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলা সহজ। বিএনপি একটি বড় ও গুছানো দল, এ দলের বদনাম করতে খুব মজা লাগে!
‘বিভিন্ন দল, টেলিভিশন ও ইউটিউবার একসাথে বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলছে। আমাদের কাজ হলো এগুলো প্রতিহত করা। জনগণের পাশে থেকে তাদের বোঝাতে হবে যে, বিএনপি ছাড়া দেশে জনগণের কোনো বন্ধু নেই।’
চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মির্জা আব্বাস বলেন, ওইসব লোকেরা অনেক বদনাম করছে, অপকর্ম, চাঁদাবাজি, দুষ্কর্ম করছে, এবং তাদের কাজের জন্য বিএনপির ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে। মুখে অথবা কাজে এই চাঁদাবাজদের প্রতিরোধ করতে হবে।
তিনি বলেন, যদি না করেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান (তারেক রহমান) বারবার বলেছেন, যদি জনগণের মন থেকে উঠে যান, আওয়ামী লীগের পরিণতির চেয়েও ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে। সাবধান থাকবেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা সবাই না, কয়েকজনের নামে অভিযোগ থাকতে পারে। একটি এলাকায় শত কর্মী থাকতে পারে, তবে দুজন হয়তো খারাপ, বা অপকর্মে যুক্ত। বাকি ৯৮ জন তো খারাপ নয়। তাই দুজনের জন্য বাকিদের কালিমালিপ্ত হতে দেওয়া যাবে না।’
মির্জা আব্বাস বলেন, বিএনপিতে কোনো অপকর্মকারী, দুষ্কৃতকারী বা চাঁদাবাজের স্থান নেই, থাকবে না। এই কথাটা মনে রাখবেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে এবং সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় কর্মশালায় মহানগরের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
আরএস
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta