অস্টে আইইওএম সোসাইটির ‘রিসার্চ সিম্পোজিয়াম ১.০’
গবেষণা শুধু জ্ঞানের সীমা বাড়ানোর কাজ করে না, এটি দেশের এবং সমাজের উন্নতির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। এই ভাবনা থেকে প্রেরণা নিয়ে আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইইওএম সোসাইটি স্টুডেন্ট চ্যাপ্টারের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘রিসার্চ সিম্পোজিয়াম ১.০’।
এই আয়োজন শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সুবিধাজনক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে, যেখানে নতুন প্রজন্মের গবেষকরা তাদের উদ্ভাবনমূলক ধারণা উপস্থাপন করে দেশের উন্নয়ন এবং সমাজে অবদান রাখতে সক্ষম হবে, যা আন্তর্জাতিক পরিসরে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে। একইসাথে, তাদের মেধা ও উদ্ভাবন রাষ্ট্রীয় কাঠামো ও পরিকল্পনায় ব্যবহার করে উন্নয়ন সাধন করবে।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অস্টের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আশরাফুল হক।
তিনি তার বক্তব্যে গবেষণার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘গবেষণা শুধু শিক্ষাগত সাফল্যের জন্য নয়, এটি সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নতির মূল হাতিয়ার। তরুণ গবেষকরা তাদের উদ্ভাবনী মেধা দিয়ে দেশের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারে। তাদের হাতেই রয়েছে ভবিষ্যতের বাংলাদেশ।’
সিম্পোজিয়ামে অংশগ্রহণকারী দলের গবেষণা প্রস্তাবনাগুলো দেশের উন্নয়ন ও সমাজের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছিল। ওয়াসিফ হাম্মাদের নেতৃত্বাধীন ‘টিম ক্যাটালিস্ট’ চ্যাম্পিয়ন হয়।
ওয়াসিফ তার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, ‘এটি আমার প্রথম প্রতিযোগিতা, যেখানে আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল সর্বোচ্চ চেষ্টা করা এবং ভালো কিছু উপস্থাপন করা। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর সত্যিই আনন্দিত, এবং দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারলে আমাদের পরিশ্রম সার্থক হবে।’
তাদের গবেষণা প্রস্তাবনা ছিল শিল্প এবং প্রযুক্তির খাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচনের জন্য, যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। মোহাম্মদ আদনানের নেতৃত্বে ‘টিম রেস্পায়ার’ প্রথম রানারআপ এবং রাইসা আনজুম ইফতির নেতৃত্বে ‘টিম র্যাভেঞ্জারস’ দ্বিতীয় রানারআপ স্থান অধিকার করে। তাদের প্রস্তাবনাগুলোও সমাজ ও পরিবেশের উন্নয়নে সহায়ক ছিল।
একটি বিশেষজ্ঞ বিচারক প্যানেল অংশগ্রহণকারীদের গবেষণা প্রস্তাবনাগুলো পর্যালোচনা করেন। প্যানেলে উপস্থিত ছিলেন মি. শেখ সালমান, মি. শাহ মুর্তোজা মোরশেদ, আফিয়া আহসান (অস্টের শিক্ষক সদস্য) এবং মি. শিহাব শাকুর। তাদের গঠনমূলক পরামর্শ অংশগ্রহণকারীদের গবেষণা দক্ষতা আরও উন্নত করতে সাহায্য করেছে।
এই আয়োজন সম্পর্কে অস্টের শিক্ষক আফিয়া আহসান বলেন, ‘এটি আমার জন্য একটি নতুন অভিজ্ঞতা। ছাত্রজীবনে আমি এমন সাহস দেখাতে পারিনি, যা আজকের প্রজন্ম করছে। তারা চমৎকার কাজ করছে এবং গবেষণায় আগ্রহী। তবে, সরকার যদি তাদের কাজের জন্য আর্থিক সহায়তা করত, তবে তারা আরও ভালো কাজ করতে পারত।’
এই সিম্পোজিয়াম শুধুমাত্র একটি প্রতিযোগিতা ছিল না, এটি ছিল তরুণদের গবেষণার মাধ্যমে দেশ ও সমাজের উন্নয়নে অংশগ্রহণের এক প্রমাণ। এই উদ্যোগ তরুণ গবেষকদের মধ্যে গবেষণার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে সাহায্য করবে এবং তাদের মেধাকে কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে সহায়ক হবে, বললেন গবেষণা টিমের উপদেষ্টা মি. শাহ মুর্তোজা মোরশেদ।
তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতে এমন আরও বৃহৎ পরিসরে আয়োজিত হবে, যেখানে তরুণ গবেষকরা তাদের উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়বে।
গবেষণার মাধ্যমে দেশ, সমাজ এবং রাষ্ট্র আলোকিত হবে—এমন অঙ্গীকার আয়োজকদের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়।
আরএস
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta