মাগুরার শিশু ধর্ষণের বিচার ১৮০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করার নির্দেশ
প্রবল ইচ্ছাশক্তি এবং ইউটিউবের সাহায্য নিয়ে পাঁচ বছরের কঠোর পরিশ্রমে নিজের তৈরি বিমান আকাশে উড়াতে সক্ষম হয়েছেন পদ্মা পাড়ের এক উদ্যমী যুবক, জুলহাস মোল্লা (২৮)। বর্তমানে তিনি দেশে ব্যাপক আলোচনায় আসছেন এবং প্রশংসিত হচ্ছেন।
জুলহাসের এই উদ্যোগ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর, গত ৪ মার্চ মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক তার বিমান উড্ডয়ন দেখতে সেখানে আসেন। সফলভাবে বিমান উড়ানোর দৃশ্য দেখে তিনি প্রশংসা জানান। এরপর সারা দেশে আলোচনায় চলে আসে জুলহাস এবং তার নিজস্ব তৈরি আল্ট্রা লাইট এয়ারক্রাফট স্কাই বাইক জে-থ্রি।
তার এই সাফল্য আন্তর্জাতিক মহলেও ছড়িয়ে পড়ে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান পরদিনই তাকে আর্থিক সহায়তা পাঠান এবং তার পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন। বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা তার উদ্ভাবনী কৌশল ব্যবহারের প্রতিশ্রুতি দেয়।
আজ, নিজেই তার তৈরি বিমানে পুনরায় আকাশে উড়লেন ফায়ার ইলেকট্রিশিয়ান জুলহাস মোল্লা। রবিবার (৯ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে, মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার জাফরগঞ্জে যমুনার পাড়ে নিজের তৈরি বিমানে উড়াল দেন তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিমানের অবসরপ্রাপ্ত পাইলট ক্যাপ্টেন আব্দুল্লাহ আল ফারুকসহ সিভিল এভিয়েশনের কর্মকর্তারা।
বিমানটি দেখতে হাজারো মানুষ যমুনার পাড়ে ভিড় জমায় এবং এলাকাটি উৎসবমুখর হয়ে ওঠে।
সিংগাইর উপজেলার তালেপুর থেকে আরমান হোসেন তার মেয়ে সুমাইয়াকে নিয়ে এসেছেন জুলহাসের বিমান দেখতে। তিনি জানান, টিভিতে জুলহাসের তৈরি বিমান দেখে তার ছেলে বোরহান এটি সামনে থেকে দেখতে চেয়েছিল।
স্কুল শিক্ষক আব্দুল হাই ঘিওর উপজেলা থেকে বন্ধুদের সঙ্গে এসেছেন। তিনি বলেন, ইচ্ছা এবং চেষ্টা থাকলে কঠিন কাজও সম্ভব হয়, এবং জুলহাস তার উদাহরণ। নিজের পরিশ্রম এবং প্রচেষ্টায় তিনি বিমান তৈরি করেছেন এবং সফলভাবে তা আকাশে উড়িয়েছেন।
জুলহাস মোল্লার বাড়ি মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার তেওতা ইউনিয়নের ষাইটঘর তেওতা গ্রামে। তার বাবা জলিল মোল্লা, জেলার দৌলতপুর উপজেলার বাঘুটিয়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। নদী ভবনের কারণে এক দশক আগে তিনি তেওতা এলাকায় চলে আসেন। পরিবারের মধ্যে তিনি পঞ্চম।
২০১৪ সালে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন এবং ফায়ার ইলেকট্রিশিয়ান হিসেবে কাজ করেন ঢাকায়। কাজ না থাকলেই তিনি গ্রামের বাড়িতে ফিরে প্লেন বানাতে শুরু করেন। পরিবারের সদস্যরা তাকে পাগল বলে অভিহিত করত। পাঁচ বছর পরে তিনি বিবাহিত হন এবং আড়াই বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তানের জনক।
জুলহাস জানান, তিন বছর গবেষণা এবং এক বছর সময় লেগেছে বিমানটি তৈরি করতে। অ্যালুমিনিয়াম এবং লোহা দিয়ে তৈরি হয়েছে বিমানটির কাঠামো, এবং পানির পাম্পের সেভেন হর্স পাওয়ারের ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, বিমানটি পরীক্ষামূলকভাবে তৈরি করা হলেও, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এটি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত হতে পারে। বিমানটি ৫০ ফুট উচ্চতায় উড়তে সক্ষম।
বাংলাদেশ বিমানের অবসরপ্রাপ্ত পাইলট ক্যাপ্টেন আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, জুলহাসের বিমান তৈরির গবেষণার প্রতি আমরা সাহায্য করব এবং এর উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করব।
সালাউদ্দিন/সাএ
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta