কমেছে ঋণ এবং আমানত
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দেশের ব্যাংক খাতে আমানতের প্রবৃদ্ধি আগের তুলনায় কমেছে। বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের ধীরগতির কারণে আমানতের প্রবৃদ্ধি শ্লথ হয়েছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা। তাদের মতে, ফেব্রুয়ারিতে দেশে ব্যাংক খাতে আমানতের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৮৮ শতাংশে নেমে এসেছে, যা জানুয়ারিতে ছিল ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ। এতে মোট আমানতের পরিমাণ সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে ১৮ লাখ কোটি টাকা হয়েছে, যা জানুয়ারিতে ছিল ১৭ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা এবং ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ছিল ১৬ লাখ ৬৯ হাজার কোটি টাকা। এর আগে ২০২৪ সালের আগস্টে আমানতের প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ০২ শতাংশে নেমে এসেছিল। এরপর সেপ্টেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ মাস প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পায়, তবে ফেব্রুয়ারিতে এই ধারা পরিবর্তিত হয়েছে। বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের কমতির কারণে এই প্রবৃদ্ধি কমেছে বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ফেব্রুয়ারিতে ৬ দশমিক ৮২ শতাংশে নেমে গেছে, যা জানুয়ারিতে ছিল ৭ দশমিক ১৫ শতাংশ এবং এটি গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। ব্যাংক খাতে আমানতের ওপর আস্থা ফিরিয়ে আনতে সুশাসন নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অতীতে কিছু ব্যাংকে অনিয়মের কারণে গ্রাহকের আস্থা কমে গিয়েছিল এবং তা পুনরুদ্ধারে ব্যাংকটির পক্ষ থেকে ১৫টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হলো সুশাসন নিশ্চিত করে আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা করা। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, আস্থা ফিরতে আরও সময় লাগবে। মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে ভোক্তা ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা ব্যাংকিং ব্যবস্থায় সঞ্চয়ের সুযোগ কমিয়ে দিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, অনেক মানুষ এখনও ব্যাংকের বাইরে টাকা রাখছে, যা আমানতের প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার আরেকটি কারণ। তবে ব্যাংক ব্যবস্থার বাইরে রাখা টাকার পরিমাণ কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারির শেষে মানুষের হাতে থাকা মোট টাকা ছিল ২ লাখ ৭১ হাজার কোটি টাকা, যা জানুয়ারিতে ছিল ২ লাখ ৭৪ হাজার কোটি টাকা। এক মাসে মানুষের হাতে থাকা টাকার পরিমাণ ২ হাজার ৭৩৫ কোটি টাকা কমেছে। তবে ঈদুল আজহার মতো বড় উৎসব সামনে থাকায় মে মাসে ব্যাংক ব্যবস্থার বাইরে টাকা বৃদ্ধি পেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta