চূড়ান্ত ভোটার তালিকা জুনে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে হতে পারে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) ডিসেম্বরে ভোটের প্রস্তুতি নিতে কাজ করছে, তবে বিভিন্ন দলের দাবির কারণে নির্বাচন ফেব্রুয়ারির মধ্যে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে ভোট অনুষ্ঠিত হতে পারে, কারণ মধ্য ফেব্রুয়ারিতে রোজা ও পরীক্ষা থাকায় শেষের দিকে ভোট আয়োজন কঠিন হতে পারে। এ তথ্য ইসির দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
নির্বাচনের জন্য ছয় মাসের কর্মপরিকল্পনা বা রোডম্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে, যা শিগগিরই ঘোষণা করা হবে। এই রোডম্যাপে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে এবং পরে কী কী কাজ করা হবে তা বিস্তারিত থাকবে। ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করে জুন-জুলাইয়ে এই রোডম্যাপ প্রকাশ করবে ইসি। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ভোট অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা থাকলেও, ৬০-৬৫ দিনের মধ্যে অক্টোবরেই তফসিল ঘোষণা করার প্রস্তুতি চলছে। তবে, দলগুলোর দাবির কারণে নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন হতে পারে। ফেব্রুয়ারিতে ভোট হতে পারে এমনও ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ডিসেম্বরে ভোট আয়োজনের নজির রয়েছে, এমনকি নভেম্বরের মাঝামাঝি তফসিলও ঘোষণা হয়েছিল। নির্বাচনের জন্য ইসি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ চালাবে, জুনে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত হবে এবং জুলাই-আগস্টে নতুন দলের নিবন্ধন গেজেট প্রকাশ করা হবে।
নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেছেন, ডিসেম্বরে ভোট আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলেছি এবং জুন-জুলাইয়ে ‘কর্মপরিকল্পনা বা অ্যাকশনপ্ল্যান’ ঘোষণা করা হবে। অক্টোবরে তফসিল ঘোষণার আগে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে। ভোটের জন্য ৬০-৭০ দিন আগে অক্টোবরে তফসিল ঘোষণা হবে।
নির্বাচনের প্রস্তুতির মধ্যে রয়েছে প্রশিক্ষণ, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নেয়া, সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করা। এসব বৈঠক আগস্ট-সেপ্টেম্বরের মধ্যে করতে হবে। জুনে ভোটার তালিকার কাজ শেষ হবে। নির্বাচনের জন্য একাধিক সম্ভাব্য তারিখ রেখে তফসিল ঘোষণা করা হবে এবং নির্বাচনি মালামাল কেনাকাটা থেকে গেজেট প্রকাশ পর্যন্ত সব কাজের সময়সীমা নির্ধারণ করা হবে।
ইসি ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন সামগ্রী মুদ্রণ করতে প্রয়োজনীয় কাগজের পরিমাণ এবং বাজেট নির্ধারণের জন্য প্রস্তুতিমূলক বৈঠক করেছে। পূর্ববর্তী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ১ লাখ ৬১ হাজার রিম কাগজ কিনতে হয়েছিল, যার জন্য ৩৩ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছিল। এবার অন্তত ১ লাখ ৭০ হাজার রিম কাগজ কিনতে হবে, যার জন্য ৩৬ কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে।
ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, নির্বাচনের প্রস্তুতি যেন কোনোভাবে পিছিয়ে না যায়, তাই সব কাজ যথাসময়ে সম্পন্ন করা হচ্ছে। নির্বাচনি মালামাল কেনাকাটা এবং মুদ্রণ থেকে শুরু করে গেজেট প্রকাশ পর্যন্ত সব কাজের সময়সীমা নির্ধারণ করা হচ্ছে। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করার আগে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের প্রথমার্ধে ‘কর্মপরিকল্পনা’ প্রকাশ করা হয়েছিল, আর বর্তমান ইসি ২০২৩ সালের নভেম্বরে দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। মে মাসে এই কমিশনের এক বছর পূর্ণ হবে। জুনে ভোটার তালিকার কাজ শেষ হওয়ার পর, কমিশন নিজেদের মেয়াদের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করছে।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta