আপনারা কি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার অপেক্ষায় আছেন : প্রশ্ন অলির।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি ড. কর্নেল অলি আহমদ বীর বিক্রম (অব.) বলেছেন, আপনারা প্রায় ৯ মাস ধরে ক্ষমতায় আছেন, তবে তা যেন শুধুই ক্ষমতা উপভোগের মতো মনে হচ্ছে। জনগণের সমস্যা সমাধানে কোনো দৃশ্যমান কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। ৫ আগস্টের পর স্বৈরাচারের গুণ্ডাদের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে জনগণের যে অভিযোগ বা মামলা হয়েছে, তা এখনও সঠিকভাবে তদন্ত হয়নি। আপনারা কি দেশের উন্নতির জন্য কাজ করছেন, না আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার জন্য সময় পছন্দ করছেন?
তিনি আরও বলেন, কিছু কিছু এলাকায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। আমাদের ভারতীয় এজেন্ট হিসেবে কাজ করা উচিত নয়, এবং আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত করার দায়িত্বও আমাদের নিতে হবে না। আমি স্পষ্টভাবে বলছি, দেশ এখন রক্তপাতের দিকে এগোচ্ছে। একদিন হয়তো আপনাদেরকেও কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হতে পারে, কারণ পাপ কখনও বাপকে ছাড়ে না। তাই, সঠিক পদক্ষেপ নিন। জনগণকে শান্তিতে বসবাস করার সুযোগ দিন। চাকরি দিতে পারলেন না, কিন্তু শান্তির পরিবেশ তৈরি করতে তো পারেন। শুধুমাত্র মিষ্টি ভাষণ দিয়ে দেশ চালানো যাবে না, জনগণের সমস্যা সমাধান হবে না।
এটি তিনি শনিবার (১৯ এপ্রিল) রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটে এক যোগদান অনুষ্ঠানে বলেন।
এদিন লে. জেনারেল (অব.) ড. চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীর নেতৃত্বে সাবেক সামরিক কর্মকর্তা, আমলা এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার পাঁচ শতাধিক মানুষ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)-তে যোগ দেন।
এলডিপি মহাসচিব সাবেক মন্ত্রী ড. রেদোয়ান আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল অলি আহমদ বীর বিক্রম (অব.)।
অলি আহমদ বলেন, বর্তমানে সমাজের কী অবস্থা, তা সকলের জানা উচিত। অনেকেই অবৈধ টাকার কাছে নিজেদের বিক্রি করেছে। তারা বিভিন্ন তদবিরে ব্যস্ত এবং রাজনীতিকে ব্যবসা হিসেবে নিয়েছে। অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করছে এবং নিজেদের জন্য বিলাসবহুল অফিস ভাড়া করছে। যদি জনগণ চুপ থাকে, তবে দেশের বড় ক্ষতি হবে।
তিনি বলেন, এলডিপি হল এই জাতির মুক্তির প্রতীক, ন্যায় এবং সমতার সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য একটি দল। সঠিক সিদ্ধান্ত নিন, দেশের উন্নতির জন্য কাজ করুন। এ ব্যাপারে যুব সমাজের ভূমিকা অপরিসীম। দেশপ্রেমিক ব্যবসায়ীদের সমস্যা শোনা, সমাধান এবং তাদের সহায়তা করার দায়িত্ব সরকারের।
স্বৈরাচারী ও খুনি হাসিনার সঙ্গীরা এখন দেশকে অস্থিতিশীল করতে ঝটিকা মিছিল করছে। বিভিন্ন জায়গায় খুনাখুনি ও ডাকাতি চলছে, অথচ সরকার নীরব দর্শক। জনগণের মনে হচ্ছে, সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে, কারণ তারা ক্ষমতায় থাকার জন্য জনগণের কাছে এটি প্রমাণ করতে চায়। বর্তমানে দেশ চলছে ফ্রিস্টাইল মোডে।
তিনি আরও বলেন, যুব ও শিক্ষিত সমাজকে জাতির বিবেক হিসেবে কাজ করতে হবে। আপনাদের হাতে এই জাতির ভবিষ্যৎ। নৈতিকতা, সততা এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে গঠনমূলক সমালোচনা চালিয়ে যেতে হবে। তবে অশোভন ব্যবহার কখনও গ্রহণযোগ্য নয়। সরকারি ও আধা সরকারি কর্মচারীদের ভারতে প্রশিক্ষণ নেয়ার ব্যবস্থা বন্ধ করা উচিত, এবং যদি প্রয়োজন হয়, তবে ইউএনডিপি বা অন্যান্য দেশ থেকে দক্ষ প্রশিক্ষক এনে দেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta