অন্তঃসত্ত্বা নববধূ, বিয়ের ১০ দিনের মধ্যে তালাক
কক্সবাজার শহরের প্রবেশমুখ লিংক রোডের সিএনজি স্ট্যান্ড থেকে ৯ মার্চ সকাল ১০টায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কক্সবাজার শাখা একটি সিএনজি চালক বজল করিম (২২) কে আটক করে। তার সিএনজি চেক করার পর কিছু না পাওয়ার পর তাকে ৮ কিলোমিটার দূরবর্তী ঝাউতলা গাড়ির মাঠে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়। পাঁচ ঘণ্টার দরকষাকষির পর, বজলের স্ত্রী টাকা দিতে অক্ষম হলে তাকে ১৮০০ পিস ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানো হয় এবং ছবি তুলে তা প্রকাশ করা হয়।
বিডি২৪লাইভ একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ, এজাহার এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য অনুযায়ী, মাদকদ্রব্য কর্মকর্তাদের দাবির সাথে ঘটনা মেলে না। তবে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর বিষয়টি অস্বীকার করেছে মাদকদ্রব্যের কর্মকর্তারা।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিদর্শক মো. তায়রীফুল ইসলাম বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় জানানো হয়েছে, ৯ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টায় সহকারী পরিচালক দিদারুল আলমের নির্দেশে বজল করিমকে আটক করা হয় এবং ১৮০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
বিডি২৪লাইভের অনুসন্ধানে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও সাক্ষ্যগ্রহণ করে মামলার এজাহারে বর্ণিত ঘটনার সাথে মিল পাওয়া যায়নি। এছাড়াও মাদকদ্রব্যের কর্মকর্তাদের দেয়া বক্তব্যের মধ্যে একাধিক বিরোধিতার সূচনা ঘটে।
একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ৯ মার্চ সকাল ১০টা ৭ মিনিটে বজল করিমকে সিভিলে আটক করে তার সিএনজি চেক করা হয়। কিছু না পাওয়ার পর, তাকে ঝাউতলা গাড়ির মাঠে নিয়ে গিয়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়, পরে ৩ লাখ টাকায় আলোচনা চলে। তবে টাকার অভাবে, ইয়াবা দিয়ে তাকে ফাঁসানো হয়।
ঘটনার আরো একজন প্রত্যক্ষদর্শী, সিএনজি মালিক সমিতির সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন, মাদকদ্রব্যের কর্মকর্তারা তাকে ডিবি অফিসার হিসেবে পরিচয় দেন। বজলকে আটক করার পর, ৪ ঘণ্টা পরে এডি দিদারুল আসেন এবং ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে ছবি তুলেন।
বজলের স্ত্রী রাশেদা বেগম জানিয়েছেন, ৫ লাখ টাকা দাবির পর, ৩ লাখ টাকা না দিতে পারায়, ইয়াবা তার স্বামীর হাতে ধরিয়ে ছবি তোলা হয়।
একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মাদকদ্রব্যের সিপাই মো. মনির হোসেন ইয়াবা বের করে বজলের হাতে দিয়ে ছবি তোলেন। এরপর দিদারুল মাদকসহ আটক করার দাবি করেন, যদিও তদন্তে এই তথ্যের সাথে কোন মিল পাওয়া যায়নি।
এডি দিদারুল দাবি করেছেন, বজল রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ইয়াবা চালান নিয়ে আসছিলেন, কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজে তার বক্তব্যের কোন মিল পাওয়া যায়নি।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কক্সবাজারের সহকারী পরিচালক একেএম দিদারুল আলক বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে আটক করা হয়েছে।’ তবে সিসিটিভি ফুটেজ ও ভিডিও অনুযায়ী, তিনি এই বিষয়ে কোনো সঠিক উত্তর দিতে পারেননি।
বজল করিমের স্ত্রী রাশেদা বেগম অভিযোগ করেছেন, মাদকদ্রব্যের কর্মকর্তারা তাদের জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের কারণে তার স্বামীকে মাদক দিয়ে ফাঁসিয়েছেন।
বিডি২৪ লাইভের কক্সবাজার প্রতিনিধি সাংবাদিক শাহীন মাহমুদ রাসেল মাদকদ্রব্যের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেন, কিন্তু এর ফলস্বরূপ, তাকে মাদক কারবারির সাথে জড়িয়ে ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র করা হয়।
শাহীন মাহমুদ রাসেল জানান, দিদারুল তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মাদক মামলা দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন এবং পরে এক সাংবাদিককে দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তদন্ত কমিটি গঠন হলেও, দিদারুল এখনও কোনো শাস্তির মুখে পড়েননি।
শাকিল/সাএ
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta