‘সাইলেন্ট কিলার’ অথবা ‘পেইন কিলার’: রিয়াদের অভাব বাংলাদেশে স্পষ্ট হবে
বাংলাদেশ ক্রিকেটের একজন প্রভাবশালী খেলোয়াড় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বিদায় নিলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে। মাঠে ফেরার আগেই ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে তিনি তার এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন। ‘সাইলেন্ট কিলার’ এবং তাওহিদ হৃদয়ের বন্ধু মহলের মতো পরিচিত ‘পেইন কিলার’ হিসেবে খ্যাতি পাওয়া রিয়াদের এই হঠাৎ সিদ্ধান্তে ক্রিকেট বিশ্বে একটি শুন্যতা তৈরি হয়েছে। তার বিদায়ের পর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সতীর্থরা, কোচ এবং ক্রিকেট বিশ্লেষকরা।
জাতীয় দলের তরুণ ক্রিকেটার তাওহিদ হৃদয় মাহমুদউল্লাহকে ‘পেইন-কিলার’ বলার মাধ্যমে লিখেছেন, ‘শিশুকালে টিভির সামনে বসে যেসব অসাধারণ মুহূর্ত দেখেছি, তার জন্য ধন্যবাদ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ভাই। সবাই আপনাকে সাইলেন্ট কিলার বললেও, আমাদের বন্ধু মহলে আপনার নাম ছিল ‘পেইন-কিলার’। এমন অনেক ম্যাচ রয়েছে, যেগুলোর শেষ মুহূর্তের শান্তি আপনি আমাদের উপহার দিয়েছেন। অবসর জীবনের জন্য শুভকামনা।’
সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা তার দীর্ঘ পোস্টে লিখেছেন, ‘একটি অসাধারণ আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের জন্য অভিনন্দন, রিয়াদ। তোর নামের পাশে থাকা সংখ্যাগুলো ছাড়িয়ে তুই আমাদের কাছে আরও বড়। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান তুই, এই অর্জন কখনো কেড়ে নেওয়া সম্ভব নয়।’
সাকিব আল হাসান মাহমুদউল্লাহকে শ্রদ্ধা জানিয়ে লিখেছেন, ‘রিয়াদ ভাই, আপনার সঙ্গে খেলা এবং আপনার কাছ থেকে শেখা আমার জন্য বড় সৌভাগ্য। খেলার প্রতি আপনার নিষ্ঠা, স্থিতিশীলতা এবং ভালোবাসার জন্য জাতি আপনাকে ঋণী।’
আরেক সতীর্থ তামিম ইকবাল লিখেছেন, ‘আপনার বর্ণাঢ্য আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ করার জন্য অভিনন্দন রিয়াদ ভাই। আপনি বাংলাদেশ ক্রিকেটের মূল শক্তি এবং আমাদের অনুপ্রেরণা। আপনার সঙ্গে ড্রেসিংরুম শেয়ার করার মুহূর্তগুলো চিরকাল মনে থাকবে।’
সাবেক নির্বাচক হাবিবুল বাশার মনে করেন, রিয়াদের মাঠ থেকে বিদায় নেওয়া উচিত ছিল। তিনি বলেন, ‘মাঠ থেকে বিদায় নিলে সত্যিই ভাল হতো, কারণ সেটাই তার প্রাপ্য ছিল। বাংলাদেশ দলের জন্য তার অবদান অস্বীকার্য।’
বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রাক্তন কোচ জেমি সিডন্স বলেন, ‘আমি শুধু রিয়াদকে অভিনন্দন জানাতে চাই। সে সবসময় মিডল অর্ডারে একটি শক্তিশালী স্তম্ভ ছিল। তার স্কিল নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। বাংলাদেশের হয়ে তার অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস রয়েছে।’
বন্ধুর বিদায়ে আবেগময় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আরাফাত সানি বলেন, ‘আমরা অনূর্ধ্ব-১৫ থেকে একসঙ্গে খেলেছি। রিয়াদ অনেক আগেই জাতীয় দলে জায়গা পেয়েছিল, তবে বন্ধুত্বের সম্পর্ক সবসময় অটুট ছিল। সে বাংলাদেশ দলকে অনেক কিছু দিয়েছে, তার জন্য শুভকামনা।’
বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাসে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ তার অসংখ্য ম্যাচ জেতানো ইনিংসের জন্য অমর হয়ে থাকবেন। তার এই নীরব বিদায় ভক্তদের কষ্ট দিলেও, বাংলাদেশ ক্রিকেট তার অবদান কখনো ভুলবে না। সাইলেন্ট কিলার ও পেইন কিলারের অধ্যায় শেষ হয়েছে, তবে তার রেখে যাওয়া স্মৃতি চিরকাল থাকবে।
বিডি প্রতিদিন/আশিক
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta