মিয়ানমারে ত্রাণ প্রদান করতে গিয়ে চাকরি হারালেন মার্কিন কর্মীরা

মিয়ানমারে ভূমিকম্পের পর উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে অংশ নিতে গিয়ে তিন মার্কিন সহায়ক কর্মী তাদের চাকরি হারিয়েছেন। এই তথ্য ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএইড)-এর প্রাক্তন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মার্শা ওয়াং।

তিনি জানান, মিয়ানমারে পৌঁছানোর পর শুক্রবার ওই তিন কর্মকর্তাকে জানানো হয়, তাদের চাকরি আর অব্যাহত থাকবে না।

ইউএসএআইডির সাবেক উপপ্রশাসক ওয়াং বলেন, “এই দলটি অক্লান্তভাবে কাজ করে যাচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে জরুরি সাহায্য পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। এমন এক পরিস্থিতিতে চাকরি ছাঁটাইয়ের খবর পাওয়া মানসিকভাবে কতটা আঘাতজনক— এটা খুবই বোঝা যায়।”

৭.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ৩,৩০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকার মিয়ানমারের জন্য ৯ মিলিয়ন ডলারের সাহায্য ঘোষণা করলেও, ইউএসএইড-এর ব্যাপক বাজেট কেটে দেয়ার কারণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে, চীন, রাশিয়া, ভারতসহ অন্যান্য দেশ দ্রুত সাহায্য পাঠিয়েছে।

সম্প্রতি এলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন "ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি" ইউএসএইড-এর বেশিরভাগ কর্মীকে ছাঁটাই করেছে এবং সরকারি ব্যয় কমানোর জন্য একাধিক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

ওয়াং জানান, চাকরি হারানো তিন সহায়ক কর্মী এখন ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় রাস্তায় রাত কাটাচ্ছেন। বাকি কর্মীদের সঙ্গে তার যোগাযোগ অব্যাহত আছে এবং শুক্রবার একটি জনসভায় এই ছাঁটাইয়ের খবর ছড়িয়ে পড়ে।

ইউএসএইড-এর প্রাক্তন কর্মকর্তাদের মতে, বিপর্যয় মোকাবিলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত বেশিরভাগ কর্মী চাকরি হারিয়েছেন এবং তৃতীয় পক্ষের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তিগুলিও বাতিল করা হয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, ইউএসএইড ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ অযৌক্তিক। তিনি জানান, “মিয়ানমারে কাজ করা সহজ নয়। সেখানে সামরিক সরকার যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা করে এবং আমাদের যথাযথভাবে কাজ করতে দেয় না।”

জাতিসংঘও জানিয়েছে, মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ত্রাণ সহায়তা সীমিত করছে। রুবিও আরও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর সর্বোচ্চ মানবিক সহায়তা প্রদানকারী দেশ হিসেবে থাকবে না এবং তিনি অন্যান্য ধনী দেশগুলোকেও এই বিষয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। সূত্র: রয়টার্স