বিচার বিভাগে স্বাধীনতা ছাড়া গণতন্ত্র বজায় রাখা সম্ভব নয়: আমির খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী মন্তব্য করেছেন যে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ছাড়া কোনো দেশে গণতন্ত্র বজায় রাখা সম্ভব নয়।
আজ রবিবার নিরাপদ সড়ক আন্দোলন নিয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে শাহবাগ থানায় দায়ের করা বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় খালাস পেয়ে তিনি এই প্রতিক্রিয়া জানান।
ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১৪ এর বিচারক মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক আমির খসরু ও তার সঙ্গে থাকা ৫ জনকে খালাস দেন। অন্য খালাস পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন- ব্যারিস্টার মিলহানুর রহমান নাওমী, মো. রফিকুল ইসলাম নয়ন, হাবিবুর রহমান হাবিব ও রবিউল ইসলাম রবি। এই দিন আমির খসরু, নাওমী ও নয়ন আদালতে উপস্থিত ছিলেন এবং তাদের উপস্থিতিতে বিচারক খালাসের রায় ঘোষণা করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
রায় খালাস পাওয়ার পর আমির খসরু তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ‘মুক্ত ও স্বাধীন বিচার বিভাগ, যার জন্য আমরা দীর্ঘ ১৫/১৬ বছর সংগ্রাম করেছি। বিচারের নামে যে প্রহসনে লাখ লাখ মানুষ নিঃস্ব হয়েছে, জীবন হারিয়েছে, কারাগারে চিকিৎসার অভাবে মারা গেছে, পুলিশ হেফাজতে নিহত হয়েছে, এর ক্ষতিপূরণ কে দেবে? বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ছাড়া একটি দেশের গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ৪২টি মামলা। বিগত কয়েক বছর ধরে সপ্তাহে দুই দিন আদালতে সময় কাটাতে হয়েছে। এর থেকে বের হতে কতদিন লাগবে তা জানি না, কিন্তু আজকের রায় হয়েছে। অনেক মামলা বাকি আছে। বাংলাদেশের ৬০ লাখেরও বেশি বিএনপি নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে, তাদের জেলে নেওয়া হয়েছে, গুম ও খুন করা হয়েছে, বাড়ি ছাড়তে হয়েছে, চাকরি ও ব্যবসা হারাতে হয়েছে।’
বিচার বিভাগের স্বাধীন সচিবালয় গঠনের বিষয়ে জানতে চাইলে আমির খসরু বলেন, ‘এটি আমাদের প্রস্তাব ছিল, যদি এটি বাস্তবায়িত না হয়, তবে আমরা একদিন এটি বাস্তবায়িত করব। অবশ্যই করব।’
মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিম রাজিব বাসচাপায় নিহত হন। এরপর নিরাপদ সড়কের দাবিতে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে। ছাত্র আন্দোলনের সময় আমির খসরুর একটি কথিত ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে ছাত্র আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ তোলা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ৫ আগস্ট শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়।
এই মামলায় আমির খসরু ও ব্যারিস্টার মিলহানুর রহমান নাওমীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৪০০/৫০০ জনকে আসামি করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে ছাত্র আন্দোলনে উস্কানির জন্য বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়। তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ২৫ জানুয়ারি আমির খসরু ও অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি বিচার শুরু করার আদেশ দেওয়া হয়।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta