সংস্কার ছাড়া সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়: আবু জাফর কাশেমী
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের এক শাখার সভাপতি আবু জাফর কাশেমী বলেছেন, নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে, সংস্কার ছাড়া সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন আগে নয়, সংস্কার আগে, এবং নির্বাচন অবশ্যই যুক্তিসঙ্গত ও গ্রহণযোগ্য সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। রবিবার (২৭ এপ্রিল) প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, "আজ আমরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করতে এসেছি। বর্তমান বিতর্কিত বিষয়টি হলো, নির্বাচন কখন হবে এবং কীভাবে হবে। আমরা নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছি, সংস্কার আগে হতে হবে। বিভিন্ন জায়গায় স্বৈরাচারি সরকারের কর্মকর্তারা আছেন। অবৈধ সরকারি কর্মকর্তাদের উপস্থিতি রয়েছে। তাই সংস্কার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সংস্কার হলে নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি হবে।"
এছাড়া, তিনি বলেন, "দ্বিতীয় বিষয় হলো, প্রথমে কি জাতীয় নির্বাচন হবে, না কি স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে? যদি জাতীয় নির্বাচন আগে হয়, তাহলে ক্ষমতায় আসা দলটি থেকে মেয়র বা মেম্বার ছাড়া অন্য কেউ নির্বাচন করতে পারবে না। তাই আমরা চাচ্ছি, আগে স্থানীয় নির্বাচন হোক, পরে জাতীয় নির্বাচন হোক। এতে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে এবং যোগ্যরা দেশের সেবা করার সুযোগ পাবে।"
আবু জাফর কাশেমী আরও বলেন, "আমরা খেলাফত আন্দোলন বিরোধিতার শিকার। বিগত সরকারের নির্বাচনে আমরা বয়কট করেছিলাম, আর তার পরিণতিতে আমাদের নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। আমি চার মাস জেলে ছিলাম, আমাদের মহাসচিব ৩২ মাস জেল খেটেছেন। আমাদের নেতাকর্মীরা সারাদেশে বৈষম্যের শিকার হয়েছে। তবে আমাদের বিরুদ্ধে একটি দল ছিল, যারা পতিত সরকারের সময় নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল এবং তাদের ফায়দা লুটেছে। তারা আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল, কিন্তু আমরা আদালতে জয়ী হয়েছি। এখন বটগাছ প্রতীক আমাদের অধিকার। আমরা নির্বাচন কমিশনে এ বিষয়ে আবেদন করেছি।"
তিনি বলেন, "আমরা চাই, আগামী নির্বাচনে বটগাছ প্রতীকে আমাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হোক। আমাদের খেলাফত আন্দোলনের অন্য অংশ নির্বাচনে অংশ নিয়ে এই প্রতীক ব্যবহার করেছে। এখন আমরা নির্বাচনে অংশ নেবো, তাই আমরা এ প্রতীকটি আমাদের নামে বরাদ্দ চাই।"
এছাড়া, তিনি জানান, "আমরা বিদেশেও সফর করেছি, চায়না আমাদের পাঁচটি দলের দাওয়াত দিয়েছিল, সেখানে আলোচনা হয়েছে। আমরা চাই, ইসলামী দলগুলো একটি প্রতীক নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন করুক। আমরা বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা একসাথে একটি প্রার্থী নির্বাচিত করতে চাই, যার যেখানে গ্রহণযোগ্যতা থাকবে, সে সেখানে প্রার্থী হতে পারে।"
তিনি বলেন, "এখন আমরা দেশ গঠনে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছি। পতিত স্বৈরাচারি সরকার চলে গেছে। এখন সময় এসেছে নতুনভাবে দেশ গড়ে তোলার। আমাদের সকল দ্বন্দ্ব ভুলে একসাথে কাজ করার প্রচেষ্টা চলছে। ইনশাল্লাহ, সমস্ত ইসলামী দল একসাথে আসবে। আমরা অনেকদূর এগিয়ে গেছি এবং এখন শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণা বাকি।"
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta