তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন নিয়ে বিশেষজ্ঞদের আহ্বান
তামাকমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন কর্তৃক আয়োজিত একটি নীতিনির্ধারণী আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, গবেষক, সমাজ সচেতন নাগরিক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের কার্যকারিতা শক্তিশালী করার জন্য আলোচনা করেন। ১৮ মার্চ ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত এই সভায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনীর দ্রুত পাসের জন্য প্রজ্ঞাপন জারির ওপর আলোচনা করা হয়।
এই সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব এ. টি. এম. সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব (জনস্বাস্থ্য অনুবিভাগ), স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, ডা. নিজাম উদ্দীন আহম্মেদ, নির্বাহী পরিচালক, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিন অ্যান্ড ইনিশিয়েটিভ (গ্যাভী) চেয়ারম্যান, ডা. মো. শিব্বির আহমেদ ওসমানী, যুগ্মসচিব (পিএইচ উইং), স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, জনাব মো. মহসীন, যুগ্মসচিব, বেসরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা শাখা, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, জনাব কাজী মোখলেছুর রহমান, যুগ্মসচিব (উন্নয়ন-১ অধিশাখা), যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, অধ্যাপক ডা. হালিদা হানুম আক্তার, প্রজনন ও শিশু স্বাস্থ্য বিভাগ (বিইউএইচএস), সদস্য, মহিলা বিষয়ক সংস্কার কমিশন সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডা. নিজাম উদ্দীন আহম্মেদ, যেখানে তিনি ডব্লিউএইচও ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোবাকো কন্ট্রোলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রস্তাব দেন। তার প্রস্তাবিত ৬টি সংশোধনী হলো- পাবলিক প্লেস এবং পাবলিক পরিবহনে ধূমপানের নির্ধারিত স্থান বিলুপ্ত করা, তামাক পণ্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করা, খুচরা বিক্রয় বন্ধ করা এবং সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার বাড়ানো।
জনাব এ. টি. এম. সাইফুল ইসলাম বলেন, অনেক তামাক কোম্পানি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে নানা প্রচার চালাচ্ছে, কিন্তু বাস্তবতা হলো, গত ১৮ বছরে সরকার তামাক থেকে রাজস্ব আয় বেড়েছে সাড়ে ১২ গুণ।
অধ্যাপক ডা. হালিদা হানুম আক্তার জানান, বাংলাদেশে ৩৫.৩% প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন, যার মধ্যে পুরুষদের সংখ্যা ৪৬%। তামাকজনিত কারণে দেশের মোট মৃত্যুর ১৯% ঘটে।
ডা. মো. শিব্বির আহমেদ ওসমানী বলেন, বাংলাদেশে তামাকজনিত রোগে ১৫ লক্ষ মানুষ আক্রান্ত এবং প্রায় ৬১ হাজার শিশু পরোক্ষ ধূমপানজনিত রোগে ভুগছে।
অন্যান্য বক্তারা তামাক কোম্পানির তরুণদের মধ্যে তামাক ব্যবহার উৎসাহিত করার প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে আলোচনা করেন এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনীর গুরুত্ব তুলে ধরেন।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের পলিসি অ্যাডভাইজর ড. মো. রফিকুল ইসলাম, ডা. বরিষা পাল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি টোব্যাকো ক্লাবের সদস্য, এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মী।
শাকিল/সাএ
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta