শনিবার ২ কোটি ২৬ লাখ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল দেওয়া হবে।
আগামী শনিবার (১৫ মার্চ) একযোগে ৬ থেকে ৫৯ মাস বয়সী প্রায় ২ কোটি ২২ লাখ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল দেওয়া হবে। মোট ১ লাখ ২০ হাজার স্থায়ী ইপিআই কেন্দ্রে এই কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেনের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় জনগণের স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছাতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশে অপুষ্টির হার কমে এসেছে এবং শিশু ও মাতৃমৃত্যু উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বব্যাপী পুষ্টি ফোরাম স্ক্যালিং আপ নিউট্রিশন (এসইউএন)-এর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করে আসছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর অপুষ্টিজনিত কারণে শিশুদের রাতকানা রোগের হার ছিল ৪.১০ শতাংশ।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১৯৭৪ সালে রাতকানা রোগ প্রতিরোধ কর্মসূচি চালু করা হয় এবং শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর মাধ্যমে এর প্রতিকার শুরু হয়। ধীরে ধীরে এটি অব্যাহত থাকায় বর্তমানে ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবে রাতকানা রোগে আক্রান্ত শিশু সংখ্যা প্রায় শূন্যের কোঠায় চলে এসেছে। ভিটামিন ‘এ’ শুধু অন্ধত্ব প্রতিরোধ করে না, ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের মৃত্যুহারও উল্লেখযোগ্যভাবে কমায়, যা সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-৪ (শিশু মৃত্যুর হার কমানো) অর্জনে সহায়ক ছিল। অনেক শিশু সঠিক পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ খাবার বা মায়ের দুধ পায় না, ফলে তারা ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
মন্ত্রণালয় জানায়, কম খরচে এবং কম সময়ে এই ঘাটতি পূরণের জন্য শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো প্রয়োজন। ইতোমধ্যে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন এর মাধ্যমে বছরে দুইবার শতকরা ৯৮% শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ খাওয়ানো হয়েছে, যার ফলে অন্ধত্বের হার ১% এর নিচে নেমে এসেছে এবং শিশু মৃত্যুর হারও কমেছে। এই সাফল্য বজায় রাখতে আগামীতে সকল ৬-৫৯ মাস বয়সী শিশুকে নিয়মিত ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো অব্যাহত রাখতে হবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, শিশুরা আমাদের ভবিষ্যৎ, তবে তাদের একটি অংশ অপুষ্টিতে ভুগছে। অন্ধত্ব একটি পরিবারের জন্য অভিশাপ এবং একটি দেশের জন্য বোঝা। বছরে দুইবার ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল গ্রহণের মাধ্যমে শিশুরা অন্ধত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে পারে এবং তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে শিশু মৃত্যুর ঝুঁকি কমানো সম্ভব। বর্তমান সরকারের সুদৃঢ় নেতৃত্বে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দেশের সব শিশুর অপুষ্টি দূরীকরণ এবং সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আগামী ১৫ মার্চ সারাদেশে ৬-৫৯ মাস বয়সী প্রায় ২ কোটি ২৬ লাখ শিশুকে ১ লাখ ২০ হাজার স্থায়ী ইপিআই কেন্দ্রের মাধ্যমে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
বিআরইউ
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta