সাবেক অর্থমন্ত্রী কামালসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানিতে সরকার নির্ধারিত অর্থের চেয়ে ৫ গুণ বেশি অর্থ আদায় করে ১ হাজার ১২৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও বিদেশে পাচারের অভিযোগে ১২টি রিক্রুটিং এজেন্সির ৩২ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা করেছে। মামলায় সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম হাজারী আসামি হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন মামলার বিষয়ে নিশ্চিত করেন।
মামলায় ১২টি এজেন্সির ৩২ জনকে আসামি করা হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো ৬৭ হাজার ৩৮০ জন শ্রমিকের কাছ থেকে ১ হাজার ১২৮ কোটি ৬১ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে এজাহারে বলা হয়েছে। প্রতিটি শ্রমিক থেকে এই প্রতিষ্ঠানগুলো ১ লাখ ৬৭ হাজার ৫০০ টাকা অতিরিক্ত নিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
আসামির মধ্যে মেসার্স ওরবিটাল এন্টারপ্রাইজের মালিক আ হ ম মোস্তফা কামাল (লোটাস কামাল) ও তার স্ত্রী কাশমিরি কামাল রয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটি ৬ হাজার ২৯ কর্মীর কাছ থেকে অতিরিক্ত ১০০ কোটি ৯৮ লাখ ৫৭ হাজার ৫০০ টাকা আদায় করেছে। আরও একটি প্রতিষ্ঠান ওরবিটাল ইন্টারন্যাশনাল-এ আ হ মোস্তফা কামাল ও তার মেয়ে নাফিসা কামাল আত্মসাৎ করেছে। তারা ২৯৯৫ জন শ্রমিকের কাছ থেকে ৫০ কোটি ১৬ লাখ টাকা অতিরিক্ত নিয়েছে।
স্নিগ্ধা ওভারসিজের মালিক সাবেক এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারী, তার স্ত্রী নুরজাহান বেগমসহ আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা এই মামলায় আসামি হয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটি ৬৬৫৭ জন শ্রমিকের কাছ থেকে ১১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা অতিরিক্ত আদায় করেছে।
বিনিময় ইন্টারন্যাশনালের মালিক আবদুস সোবহান ভুঁইয়া (চৌদ্দগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান) ও তার স্ত্রী তাসলিমা আক্তারও আসামি হয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটি ৫৪৫৮ শ্রমিকের কাছ থেকে ৯১ কোটি ৪২ লাখ টাকা অতিরিক্ত আদায় করেছে।
ফাইভ এম ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের মালিক লে. জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী ও তার মেয়ে তাসনিয়া মাসুদও আসামি হয়েছেন। তারা ৭১২৪ শ্রমিকের কাছ থেকে ১১৯ কোটি ৩২ লাখ টাকা অতিরিক্ত আদায় করেছে।
মেসার্স ইউনিক ইস্টার্ন (প্রাঃ) লি. এর মালিক নুর আলী, তার স্ত্রী সেলিনা আলী ও মেয়ে নাবিলা আলীও আসামি হয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটি ৩৭৮৮ শ্রমিকের কাছ থেকে ৬৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা অতিরিক্ত আদায় করেছে।
ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনাল লি. এর মালিক মোহাম্মদ রুহুল আমিন ও তার স্ত্রী লুৎফুর নেছা শেলী আসামি হয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটি ৭৭৮৭ শ্রমিকের কাছ থেকে ১৩০ কোটি ৪৩ লাখ টাকা অতিরিক্ত আদায় করেছে।
ঢাকা ২০ আসনের সাবেক এমপি বেনজীর আহমদ এবং মেসার্স আহমদ ইন্টারন্যাশনালের মালিক হিসেবে ৮৫৯২ শ্রমিকের কাছ থেকে ১৪৩ কোটি ৯১ লাখ টাকা অতিরিক্ত আদায় করেছেন।
বি এম ট্রাভেলস লি. এর স্বত্বাধিকারী শফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী মৌসুমি আক্তারও আসামি হয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটি ৮০৯৩ শ্রমিকের কাছ থেকে ১৩৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা অতিরিক্ত আদায় করেছে।
এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে, বিএমইটি ও বায়রার রেজিস্ট্রেশন শর্ত ভঙ্গ করে, শ্রমিকদের কাছ থেকে ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকার জায়গায় ৫ গুণ অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেছেন।
আরএস
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta