শেখ হাসিনা-আজিজসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিডিআরের সাবেক উপ-সহকারী পরিচালক (ডিএডি) আব্দুর রহিমের মৃত্যুর বিষয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক সেনাপ্রধান (বিজিবি প্রধান সময়) জেনারেল আজিজ আহমেদসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা গ্রহণ করেছে রাজধানীর চকবাজার থানা পুলিশ।
আদালতের নির্দেশে ৪ মার্চ চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামলাটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করেন। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসেন মুহাম্মদ জুনাইদ ৭ মার্চ মামলার এজাহার গ্রহণ করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য ১০ এপ্রিল তারিখ নির্ধারণ করেন।
রবিবার (৯ মার্চ) চকবাজার থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার উপ-পরিদর্শক আশরাফুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
গত ২৫ আগস্ট ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আক্তারুজ্জামান আদালতে বাদী হয়ে মামলার আবেদন করেন ভুক্তভোগী ডিএডি আব্দুর রহিমের ছেলে অ্যাডভোকেট আব্দুল আজিজ। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে ২০১০ সালের বিডিআর বিদ্রোহে মৃতের ঘটনায় করা অপমৃত্যুর মামলা রিকল করেন। পরে মামলার অবস্থা দেখে আদালত পরবর্তী নির্দেশ দেন।
২ ডিসেম্বর চকবাজার মডেল থানার এসআই (নিরস্ত্র) আহম্মদ আলী মোল্লা এই ঘটনা নিয়ে অপমৃত্যুর মামলা হয়নি বলে আদালতে অবহিতকরণপত্র জমা দেন। ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মুহাম্মদ জুনাইদ চকবাজার থানাকে মামলাটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
এখনকার সরকারের অধীনে পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রথম মামলা এটি। মামলায় প্রধান আসামি হিসেবে জেনারেল আজিজ আহমেদ, দ্বিতীয় আসামি হিসেবে পিপি মোশাররফ হোসেন কাজল এবং শেখ হাসিনা চতুর্থ স্থানে রয়েছেন। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য আসামির মধ্যে সাবেক কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশরাফুল ইসলাম খান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক এমপি নূরে আলম চৌধুরী লিটন, সাবেক এমপি শেখ সেলিম ও শেখ হেলাল, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক, সাবেক এমপি মির্জা আজম, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু রয়েছেন। এছাড়া হত্যাকাণ্ডে জড়িত মন্ত্রী-এমপির মতো আরও ২০০ জন অজ্ঞাত আসামি হিসেবে রয়েছেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, শেখ হাসিনা সরকার দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার উদ্দেশ্যে বিদেশি এজেন্টদের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ রাইফেলসের মেধাবী অফিসারদের হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানা হত্যাকাণ্ডে ৭৪ জন নিহত হয়, যার মধ্যে ৫৭ জন সেনা অফিসার ছিলেন। এই হত্যাকাণ্ডের রাজসাক্ষী হওয়ার জন্য ভুক্তভোগীকে লোভনীয় প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তিনি অন্যায় সাক্ষ্য দিতে রাজি হননি। তাই তার বাবা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডিএডি আব্দুর রহিমকে ২০১০ সালের ২৯ জুলাই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। মৃত্যুর পর ডাক্তাররা স্ট্রোক বলে সার্টিফিকেট দেন। এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে মামলা করা হয়েছে।
আরএস
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta