রাজস্ব অর্জনে চ্যালেঞ্জ
২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। তবে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে তা কমিয়ে ৪ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়। তবুও এনবিআর লক্ষ্য অর্জনে পিছিয়ে পড়েছে। নতুন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, এর মধ্যে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করবে এনবিআর। অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, কার্যকর কর সংস্কার ছাড়া এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয়। তারা উল্লেখ করেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন, যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক এবং অন্যান্য পদক্ষেপের কারণে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূর্ণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।
এনবিআরের সর্বশেষ পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ১১ মাস শেষে মে মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য থেকে ৬৬ হাজার ৬৭৮ কোটি ১৯ লাখ টাকা কম রয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য জুন মাসে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৭১৭ কোটি টাকা আদায় করতে হবে। এনবিআর জানায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মে পর্যন্ত রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৪৬০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, কিন্তু আদায় হয়েছে ৩ লাখ ২৭ হাজার ৭৮২ কোটি ২৬ লাখ টাকা। আয়কর ও ভ্রমণ করের রাজস্বে লক্ষ্য পূরণে পিছিয়ে আছে ৩৭.২৭%। জুলাই-মে সময়ে ১ লাখ ৭১ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ১ লাখ ৭ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা। এছাড়া চলতি অর্থবছরের মাঝপথে শতাধিক পণ্য ও সেবায় ভ্যাট এবং শুল্ক বাড়িয়েও ২৬.৭৩% ঘাটতি হয়েছে।
সিপিডি জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আহরণে ১ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি থাকবে। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে রাজস্ব আহরণের প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র ৫%, যা গত বছর ছিল ১৩% এর বেশি। এতে রাজস্ব লক্ষ্য পূরণে বড় ধরনের ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। তিনি বলেন, শেষ তিন মাসে ৬৪% প্রবৃদ্ধি প্রয়োজন, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে এটি সম্ভব নয়।
অর্থনীতি বিশ্লেষক মো. মাজেদুল হক বলেন, চলমান পদ্ধতিতে রাজস্ব আদায় কঠিন হবে। তিনি জানান, ডিজিটাল পদ্ধতি এবং ন্যায্য করনীতি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত করতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ ঋণ এবং স্বচ্ছ প্রণোদনা প্যাকেজের প্রয়োজন।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta