মামলা ব্যবসা ও মিথ্যা মামলা রোধে আইন পরিবর্তন করা হবে: আইন উপদেষ্টা

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানান, মামলা বাণিজ্য ও ভুয়া মামলা নিয়ে বর্তমান সরকার উদ্বিগ্ন। জনগণকে এই সমস্যা থেকে মুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধন করা হচ্ছে। সংশোধনের মাধ্যমে প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে প্রমাণ না থাকলে আদালত অভিযুক্তকে বিচার শুরু হওয়ার আগেই মুক্তি দিতে পারবে।

রোববার দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা জানান। এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত জানাতে। উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

আইন উপদেষ্টা বলেন, আজকের বৈঠকে ফৌজদারি কার্যবিধিতে গুরুত্বপূর্ণ একটি সংশোধন করা হয়েছে। ভুয়া মামলা এবং মামলায় আসামিদের সংখ্যাকে বাড়িয়ে মামলা বাণিজ্য বন্ধ করতে আমরা দীর্ঘদিন চেষ্টা করছি। দেশের শীর্ষ আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে সিআরপিসি-তে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে।

আসিফ নজরুল বলেন, একটি হত্যা মামলা তদন্তে বছর খানেক সময় লাগে। অনেক সময় এসব মামলা নিয়ে মামলা বাণিজ্যের অবস্থা সৃষ্টি হয়। আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে আতঙ্কে থাকে। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিতে নতুন বিধান প্রবর্তন করা হয়েছে। পুলিশ কমিশনার বা পুলিশ সুপার যদি মনে করেন, কোনো মামলার প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট জরুরি, তাহলে তদন্ত কর্মকর্তাকে সেই রিপোর্ট জমা দিতে বলা হবে। এরপর ম্যাজিস্ট্রেট যদি দেখেন যে আসামিদের অধিকাংশের বিরুদ্ধে প্রমাণ নেই, তবে তিনি ট্রায়ালের আগে তাদের মুক্তি দিতে পারবেন।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই সংশোধনের ফলে মামলা বাণিজ্য কমবে। আদালত ও পুলিশ একযোগে কাজ করে যেসব মামলায় ভিত্তিহীন গ্রেফতারি ও মামলা করা হয়, প্রাথমিক প্রমাণ না থাকলে আসামিদের মুক্তি দেয়া সম্ভব হবে। তবে তদন্ত থেমে যাবে না বলেও তিনি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে আসিফ নজরুল আরও বলেন, বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের (ওএইচসিএইচআর) একটি অফিস স্থাপন করা হবে। উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এই বিষয়ে নীতিগত সম্মতি হয়েছে। প্রথমে তিন বছরের জন্য অফিস চালু হবে, পরবর্তীতে প্রয়োজন অনুযায়ী তা নবায়ন করা হবে।

দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে এই সংস্থা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

এ সময় কুমিল্লার মুরাদনগরের নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনায় মাগুরার মতো সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিচার হবে বলেও আইন উপদেষ্টা জানান।