শামসু এবং তার পরিবারের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সাবেক জাতীয় সংসদের হুইপ ও চট্টগ্রামের পটিয়া আসনের বিতর্কিত সাবেক এমপি সামশুল হক চৌধুরী, যাকে বিচ্ছু শামসু নামেও পরিচিত, এবং তার পরিবারের ছয় সদস্যের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে।
এছাড়া ব্যাংক হিসাব জব্দ হওয়া অন্যান্য সদস্যরা হলেন- বিচ্ছু শামসুর ছেলে নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন, স্ত্রী কামরুন নাহার চৌধুরী, মেয়ে তাকলিমা নাছরিন চৌধুরী, তাহমিনা নাসরিন চৌধুরী, এবং দুই ভাই ফজলুল হক চৌধুরী মহব্বত ও মজিবুল হক চৌধুরী নবাব। অবৈধ সম্পদ অর্জন, অর্থ পাচারসহ একাধিক অভিযোগে সম্প্রতি দুদক তাদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
দুদক চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আতিকুল আলম বলেন, ‘পটিয়ার সাবেক এমপি শামশুল হক চৌধুরী এবং তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। এটি তদন্তের একটি প্রাথমিক পদক্ষেপ।’
দুদকের একাধিক সূত্র জানায়, অবৈধ সম্পদ অর্জন, অর্থ পাচার এবং ক্যাসিনো ব্যবসায় সংশ্লিষ্টতা সহ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে বিচ্ছু শামসু ও তার পরিবার সম্পর্কে তদন্ত শুরু করেছে দুদক। এই তদন্তের অংশ হিসেবে তাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে পটিয়া উপজেলায় বিচ্ছু শামসু এবং তার পরিবার সীমাহীন দুর্নীতি ও লুটপাট চালিয়েছিল। প্রশাসনে তাদের একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল, তারা সরকারি জমি দখল, তদবির বাণিজ্য, পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজি, মাদক ও অস্ত্র বেচা-বিক্রির সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করত। তাদের চাপে শত শত বিএনপি-জামায়াত নেতা মিথ্যা মামলায় জেলে গিয়েছিল।
মাদক ব্যবসা, সরকারি অর্থ লুটপাট, এবং অন্য অপকর্মের মাধ্যমে সামশুল হক চৌধুরী ও তার পরিবারের সদস্যরা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে ওঠে। গত ১৬ বছরে তারা ঢাকা-চট্টগ্রামে অসংখ্য ফ্ল্যাট, জমি এবং ব্যবসায়িক স্পেস কিনেছে।
সামশুল হক চৌধুরীর ছোট ভাই ফজলুল হক চৌধুরী মহব্বত ও মুজিবুল হক চৌধুরী নবাবও একইভাবে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যান। ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর, দুদক অবৈধ সম্পদ অর্জনকারী এবং বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে, এবং সামশুল হক চৌধুরী সহ প্রায় ২০০ রাজনীতিবিদ, আমলা ও ব্যবসায়ীকে চিহ্নিত করা হয়। তবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাবেক হুইপ সামশুল হক চৌধুরীকে কোন জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াই দায়মুক্তি দেয়া হয়।
ক্ষমতার পরিবর্তনের পর, বিচ্ছু শামসু ও তার পরিবার আত্মগোপনে চলে যান। তার ছেলে শারুন ইতোমধ্যে দুবাই পালিয়ে গেছে, এবং অন্যান্য সদস্যরা যশোর সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করেছে।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta