চুরির অভিযোগে বাবা-ছেলেকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় চুরির অভিযোগে বাবা-ছেলেকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। রোববার (১৩ এপ্রিল) বেলা ১টার দিকে উপজেলার নাওগাঁও দক্ষিণ পাড়া গ্রামে এই হত্যাকান্ডটি ঘটে।
নিহতরা হচ্ছেন- আবদুল গফুর (৫০) এবং তার ছেলে মেহেদী হাসান (১৫)। আবদুল গফুর নাওগাঁও দক্ষিণ পাড়া গ্রামের হযরত আলীর পুত্র ছিলেন এবং তিনি ফিসারি ব্যবসা করতেন বলে জানা গেছে।
খবর পেয়ে পুলিশ নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে এবং ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
আটককৃতরা হলেন- পলাশীহাটা গ্রামের মো. রিপন (৩২), নাওগাঁও গ্রামের মৃত সাবান আলীর ছেলে মো. মোজাম্মেল হক (৬৫), এবং মজিবুর রহমানের ছেলে আল আমিন (১৩)।
পুলিশ জানায়, আবদুল গফুরের প্রতিবেশী এক প্রবাসীর বাড়িতে গত দুদিন আগে চুরির ঘটনা ঘটে। আজ (১৩ এপ্রিল) বেলা ১১ টার দিকে এই বিষয় নিয়ে সালিশ বসানোর আয়োজন করা হয়। সালিশে না গিয়ে ওই লোকজন দুপুর ১ টার দিকে আবদুল গফুরের বাড়িতে এসে বাগবিতণ্ডা শুরু করে। এর পর তারা আবদুল গফুরের বাড়িতে ভাংচুর চালায়।
এ সময় আবদুল গফুর এবং তার ছেলেকে রড দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে ঘটনাস্থলে হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে ফুলবাড়িয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং বাবা-ছেলের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। ঘটনার পর থেকে এলাকার পরিস্থিতি থমথমে হয়ে পড়ে এবং পুরুষরা এলাকায় অদৃশ্য হয়ে যায়।
নিহতের স্ত্রী শিল্পী আক্তার জানান, তার স্বামী প্রতিবেশী মোতালেবদের কাছে ২ লাখ টাকায় ৫ বছরের জন্য ৭ কাটা জমি বন্ধক দেন। পরে তাদের আরও ১ লাখ টাকার প্রয়োজন হলে মোতালেবদের কাছে টাকা চাইলে তারা টাকা না দিয়ে অন্যত্র বন্ধক দেওয়ার কথা বলেছিল। এ নিয়ে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে ১ লাখ টাকা দিয়েছিল এবং পরে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দিয়েছিল।
শিল্পী আক্তার আরও জানান, এরপর তার সতিনের ছেলে মেহেদী পুকুর থেকে ২টি তেলাপিয়া মাছ ধরলে তাদের চুরির অপবাদ দিয়ে আজ সালিশের নামে লোকজন ভাড়া করে এনে তার স্বামী ও ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
ফুলবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান বলেন, বাড়িতে চুরির ঘটনা সন্দেহে সালিশে না যাওয়ার কারণে বাবা-ছেলেকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত মামলার প্রস্তুতি চলছে।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta