গার্মেন্টে অস্থিতিশীলতার আশঙ্কা
প্রতিবছরের মতো এবারও ঈদের আগে গার্মেন্ট খাতে অস্থিরতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অর্ডার কমে যাওয়ার ফলে আর্থিক সমস্যায় পড়া কারখানাগুলোতে এই ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছেন শিল্প পুলিশের সদস্যরা, যারা আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে কাজ করছেন।
কারখানার সমস্যা সমাধানের জন্য আলোচনা করা হচ্ছে। গার্মেন্ট মালিকদের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। ২০ রোজার আগেই শ্রমিকদের বেতন পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঈদের আগে রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করা যাবে না, এমন নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ। শিল্প পুলিশ জানিয়েছে, রাজধানীর উপকণ্ঠে তিনটি শিল্পাঞ্চল রয়েছে, যেখান দিয়ে ঈদে বাড়ি যাওয়ার জন্য মানুষ যাতায়াত করে। বেতন ও বোনাস পরিশোধ না হলে শ্রমিকদের অসন্তোষ সৃষ্টি হতে পারে এবং সড়ক অবরোধসহ সহিংসতা দেখা দিতে পারে। তাই পুলিশ আগেই প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মো. ছিবগাত উল্লাহ বলেছেন, ঈদের আগে গার্মেন্টে অস্থিরতা নিয়ে সবসময় শঙ্কা থাকে এবং এবারও তেমন শঙ্কা রয়েছে। তিনি বলেছেন, আমরা রাস্তায় কাউকে দাঁড়াতে দেব না। বেশ কিছু কারখানা এখনও বেতন দিতে পারেনি, মালিকদের সময়মতো বেতন পরিশোধের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে এবং শ্রমিকদেরও জানানো হয়েছে রাস্তা বন্ধ করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, রাস্তা বন্ধ করার পক্ষে নয় পুলিশ। এটি করলে ঈদের সময় ঘরমুখী মানুষ ভোগান্তিতে পড়বে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, রাস্তা বন্ধ করা যাবে না, এবং আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করতে হবে। কারখানা মালিকদের দ্রুত বেতন পরিশোধ করতে বলা হচ্ছে। এবারে সিদ্ধান্ত হয়েছে ২০ রমজানের মধ্যে সব কারখানায় বেতন পরিশোধ করতে হবে। পুলিশ চেষ্টা করছে যাতে রাস্তা অবরোধ করলে তা সরিয়ে দেওয়া হয়।
ঈদের আগে গার্মেন্ট সেক্টরে অসন্তোষ রোধ করতে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ এবং শিল্প পুলিশ আগেই প্রস্তুতি নিয়েছে। বিজিএমইএর তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা ও চট্টগ্রামে ২,১০৭টি কারখানার মধ্যে ৪টি কারখানা জানুয়ারি মাসের বেতন এবং ১০৬টি কারখানা ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন দিতে পারেনি। জানুয়ারি মাসে ৯৯% কারখানা এবং ফেব্রুয়ারিতে ৯৪% কারখানা বেতন পরিশোধ করেছে। শ্রমিক নেতারা অভিযোগ করছেন, রোজা ও ঈদ এলে শিল্প মালিকরা শ্রমিকদের জিম্মি করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করেন এবং সরকারের কাছ থেকে অতিরিক্ত সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেন। এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৭ হাজার কোটি টাকা বিশেষ তহবিল ছাড়ার দাবি উঠেছে।
গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের সদস্য শাহীন আলম বলেন, শ্রমিকদের বেতন ও বোনাসের জন্য প্রতিবছর রাস্তায় নামতে হয়। গার্মেন্ট শ্রমিকদের এত অবদান থাকার পরও কেন তারা তাদের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের জন্য রাস্তায় নামবে? তিনি অভিযোগ করেন, কোনো সরকারই শ্রমিকদের পক্ষ নেয়নি এবং তাদের সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসেনি। শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র দাবি জানিয়েছে, ২০ রমজানের মধ্যে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন এবং ঈদ বোনাস দিতে হবে।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta