মানবশূন্য কারখানার যুগ: চীনে শুরু হলো সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় উৎপাদন ব্যবস্থা
বিশ্বব্যাপী উৎপাদন খাতে নতুন যুগের সূচনা হয়েছে, যেখানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে চীন। আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় ‘ডার্ক ফ্যাক্টরি’ এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। এসব কারখানা মানুষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই ২৪ ঘণ্টা চলতে সক্ষম, ফলে উৎপাদন হচ্ছে অধিকতর দ্রুত, নির্ভুল এবং সর্বোচ্চ দক্ষতার সঙ্গে।
ডার্ক ফ্যাক্টরি কী?
‘ডার্ক ফ্যাক্টরি’ হলো এমন একটি অত্যাধুনিক উৎপাদন কেন্দ্র যেখানে কোনো শ্রমিক কাজ করে না। স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র, রোবট, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ও ইন্টারনেট অব থিংস (IoT)-এর মাধ্যমে পুরো কারখানার কার্যক্রম পরিচালিত হয়। যেহেতু এখানে মানুষের উপস্থিতি দরকার হয় না, তাই আলো ছাড়াই এসব কারখানা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে, যা বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সহায়তা করে।
স্বয়ংক্রিয় কারখানার গুরুত্বপূর্ণ দিক
১. সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় উৎপাদন প্রক্রিয়া: কাঁচামাল থেকে শুরু করে চূড়ান্ত পণ্য প্যাকেজিং পর্যন্ত প্রতিটি ধাপ স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়, যা উৎপাদনকে দ্রুত ও নিখুঁত করে তোলে।
২. স্মার্ট মেশিন নেটওয়ার্ক: IoT ও AI প্রযুক্তির মাধ্যমে কারখানার সমস্ত যন্ত্র একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে, স্বয়ংক্রিয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেয় এবং প্রয়োজনে রক্ষণাবেক্ষণ কাজও সম্পন্ন করে।
৩. AI-চালিত মান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা: উন্নত মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম ব্যবহার করে প্রতিটি পণ্যের গুণমান পর্যবেক্ষণ করা হয়, যা ত্রুটি শনাক্ত ও অপচয় রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৪. পরিবেশবান্ধব উৎপাদন ব্যবস্থা: শক্তি ব্যবস্থাপনার অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ খরচ কমানো হয়, যা টেকসই উৎপাদনে সহায়তা করে।
শিল্প খাতে বিনিয়োগের নতুন ধারা
বিশ্বের বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এখন স্বয়ংক্রিয় উৎপাদন ব্যবস্থায় বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে। স্মার্টফোন, গাড়ি, ওষুধসহ বিভিন্ন শিল্পে এই প্রযুক্তির প্রয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুধু চীন নয়, অন্যান্য দেশেও দ্রুত এ ধরনের প্রযুক্তি বিস্তৃত হচ্ছে, যা শিল্প খাতে নতুন প্রতিযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি করছে।
কর্মসংস্থান ও ভবিষ্যতের পরিবর্তন
যদিও স্বয়ংক্রিয় কারখানাগুলো শ্রমিকের প্রয়োজনীয়তা কমিয়ে দিচ্ছে, তবে এর ফলে রোবটিক্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ডেটা সায়েন্সের মতো ক্ষেত্রে দক্ষ জনবলের চাহিদা বাড়ছে। ফলে কর্মীদের নতুন প্রযুক্তির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta