সৌরজগতে শনি এখন ‘চাঁদের রাজা’, মোট সংখ্যা ২৭৪
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা শনির চারপাশে ১২৮টি নতুন চাঁদের খোঁজ পেয়েছেন। এই নতুন আবিষ্কারের ফলে শনির মোট চাঁদের সংখ্যা ২৭৪-এ পৌঁছেছে, যা সৌরজগতের অন্য যেকোনো গ্রহের চেয়ে বেশি।
তাইওয়ানের অ্যাকাডেমিয়া সিনিকার বিজ্ঞানী এডওয়ার্ড অ্যাশটনের নেতৃত্বে এক গবেষক দল এই চাঁদগুলো আবিষ্কার করেছেন। আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান সংস্থা (IAU) এই আবিষ্কারটি স্বীকৃতি দিয়েছে। এই গবেষণা সৌরজগতের গঠন এবং গ্রহ-উপগ্রহের বিবর্তন সম্পর্কিত ধারণা পেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শনির ‘চাঁদের আধিপত্য’ এবং অন্যান্য গ্রহের তুলনা
নতুন চাঁদ আবিষ্কারের ফলে শনি তার চাঁদের সংখ্যা নিয়ে বৃহস্পতিকে পেছনে ফেলে দিয়েছে। বৃহস্পতির চাঁদের সংখ্যা ৯৫, যেখানে ইউরেনাসের ২৮ এবং নেপচুনের ১৬টি চাঁদ রয়েছে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, বৃহস্পতি কখনও শনির চাঁদের সংখ্যা ছাড়াতে পারবে না।
তবে শনির নতুন চাঁদগুলো বেশ ছোট আকারের। পৃথিবীর চাঁদের ব্যাস যেখানে প্রায় ৩,৪৭৫ কিলোমিটার, সেখানে শনির নতুন চাঁদগুলোর ব্যাস কেবল কয়েক কিলোমিটার। এগুলো বেশ দূরবর্তী কক্ষপথে ঘুরছে এবং কখনো কখনো শনির প্রধান চাঁদগুলোর বিপরীত দিকে আবর্তিত হয়, যেমন টাইটান ও রিয়ার।
কিভাবে শনির চাঁদগুলো খোঁজা হলো
কানাডা-ফ্রান্স-হাওয়াই টেলিস্কোপ ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা ছবি সংযুক্তির মাধ্যমে এই চাঁদগুলো শনাক্ত করেছেন। শনির চাঁদগুলোর নামকরণের প্রচলিত নিয়ম অনুসারে নতুন চাঁদগুলোর নাম গ্যালিক, নর্স এবং কানাডিয়ান ইনুইট দেবতাদের নামে রাখা হবে।
আগের গবেষণার ফলস্বরূপ
আগে স্কট শেপার্ড নামক এক জ্যোতির্বিজ্ঞানী ২০০৪ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে সুবারু টেলিস্কোপের মাধ্যমে শনির চারপাশে কিছু ক্ষীণ আলোর দৃষ্টিতে পান। কিন্তু প্রযুক্তির অভাবের কারণে সেসময় চাঁদগুলোর কক্ষপথ নির্দিষ্ট করে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে, এডওয়ার্ড অ্যাশটন এবং তার দল উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে এসব চাঁদের অবস্থান সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছেন।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, শনির এত অধিক সংখ্যক চাঁদের পেছনে একটি কারণ হতে পারে তার সৌরজগতের তুলনামূলক দূরবর্তী অবস্থান। সূর্য থেকে দূরে থাকায় শনি বরফাচ্ছন্ন বস্তুকে আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে, যা সহজে চাঁদে রূপান্তরিত হয়েছে। এই আবিষ্কার সৌরজগতের বিবর্তন এবং গ্রহ-উপগ্রহের গঠনের ইতিহাসে নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে। ভবিষ্যতে উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে শনির আরও ছোট উপগ্রহের সন্ধান পাওয়া যেতে পারে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta