নিবন্ধনবিহীন সিএনজি নোয়াখালীর জনপদের ভয়ঙ্কর সংকট, টার্গেট নারীরা
নোয়াখালী জেলায় নিবন্ধনহীন সিএনজি অটোরিকশার দৌরাত্ম্য ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। এসব সিএনজি প্রায়ই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে, যার ফলে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত। অধিকাংশ সিএনজি অবৈধ ও অনিবন্ধিত, যা ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধের কারণ হয়ে উঠছে। সড়ক পরিবহণ আইনে বলা হয়েছে, গাড়ি রেজিস্ট্রেশন ছাড়া চলাচল বেআইনি, তবে ট্র্যাফিক বিভাগের নিষ্ক্রিয়তা এবং পর্যাপ্ত নজরদারি না থাকায় এসব সিএনজি অবাধে চলাচল করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদী, চৌমুহনীসহ বিভিন্ন উপজেলায় হাজার হাজার নাম্বারবিহীন সিএনজি চলাচল করছে। এসব সিএনজির চালকদের অনেকেরই ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই এবং মাদকাসক্ত হয়ে তারা বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে দুর্ঘটনার সৃষ্টি করছে।
এছাড়া নাম্বারবিহীন সিএনজি ব্যবহার করে মাদক ব্যবসা, ছিনতাই এবং অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে। সম্প্রতি আরও কয়েকটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। বিভিন্ন স্টেশনে যানজটের কারণে সাধারণ মানুষও ভোগান্তি পোহাচ্ছে। গতকাল নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুরে সিএনজিতে এক নারী শিক্ষিকাকে নির্যাতনের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে।
১২ মার্চ বেগমগঞ্জ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের এক ছাত্রীর সঙ্গে সিএনজি চলাকালে শারীরিক নির্যাতন এবং ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। তার চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে অপরাধীরা পালিয়ে যায়। এই ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করলে র্যাব অভিযানে দুই জনকে আটক করে।
এছাড়া সোনাইমুড়ী উপজেলায় ঈদের কেনাকাটা করতে আসা এক নারী সিএনজি থেকে নামার পর দেখতে পান তার ব্যাগ থেকে টাকা চুরি হয়ে গেছে। একই ঘটনার শিকার হন সৈয়দ আলম ও হাজী আহমেদ উল্ল্যা।
অনেক সিএনজি চালক জানান, তাদের বেশিরভাগ সিএনজি কোনো নাম্বার প্লেট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়াই চলাচল করে। তারা প্রশাসনকে মাসোহারা দিয়ে এসব অবৈধ সিএনজি চালিয়ে থাকেন। বিআরটিএ জানিয়েছে, তারা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে।
স্থানীয় সিএনজি বিক্রেতারা বলেন, "নিবন্ধন ছাড়া গাড়ি বিক্রি করা সাধারণ ব্যাপার, যদি সমস্যা হয়, ব্যাংক ড্রাফট করে নিবন্ধন করিয়ে নিন।" নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন স্থানে এভাবে নিবন্ধনহীন সিএনজি বিক্রি হচ্ছে।
নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল ফারুক জানান, নাম্বারবিহীন সিএনজির বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে এবং কিছু সিএনজি আটক করা হয়েছে। এসব সিএনজির দৌরাত্ম্য বন্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, এই বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বৈঠকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে।
শাকিল/সাএ
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta