সেই বিচারকের অভিশংসন দাবি করছেন ট্রাম্প, প্রধান বিচারপতির সতর্কতা
ইকবাল আহমেদ ওবির বিরুদ্ধে পণ্য রপ্তানির আড়ালে অর্থপাচার এবং পাচারকৃত অর্থে যুক্তরাজ্যে সম্পদ সৃষ্টির অভিযোগ রয়েছে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সময় শেখ হাসিনা ও রেহানার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচিত ছিলেন এই বিতর্কিত ব্যবসায়ী। শাসক শেখ হাসিনার প্রভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে গড়ে তোলেন এনআরবি ব্যাংক। দুর্নীতি করার কারণে ২০১৫ সালে ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি থেকে আজীবন বহিষ্কৃত হয়েছিলেন তিনি। এমনকি ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদে তাঁকে রেখে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্ষদ গঠন করায় গ্রাহকদের মধ্যে ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, চতুর্থ প্রজন্মের এনআরবি ব্যাংকে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাদের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করতে পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়। ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ ওবীকে নতুন পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে বিভিন্ন অভিজ্ঞ ব্যক্তি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই ইকবালের মাধ্যমে আবারও সরকারী লুটপাট চালানোর আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাঁরা জানতে চান, কেন ইকবাল আহমেদকে ব্যাংকের শীর্ষ পদে বসানো হলো এবং তাঁর ক্ষমতার উৎস কী? তাঁরা দাবি করেন, তাঁর এবং তাঁর ভাইদের অবৈধ সম্পদ খুঁজে বের করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
এনআরবি ব্যাংক পরিচালনা কমিটির তিন সদস্য ইকবাল আহমেদ, কামাল আহমেদ ও বিলাল আহমেদ ১৭ মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত ব্যাংকের উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার ছিলেন। তাদের আরও বিভিন্ন ব্যবসায়িক উদ্যোগ রয়েছে, যার মধ্যে যুক্তরাজ্যে একাধিক কোম্পানি রয়েছে।
এছাড়া এই তিন ভাইয়ের নামে যুক্তরাজ্যে সিমার্ক পিএলসি, আইবিসিও হোল্ডিংস, এমএআই ইনভেস্টমেন্ট হোল্ডিংস, ভার্মিলিয়ন গ্রুপ লিমিটেডসহ বেশ কিছু কোম্পানি রয়েছে, যেগুলো মূলত রিয়েল এস্টেট, বিনিয়োগ এবং আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত।
গত এক দশকে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়ে নিজেকে হাসিনা বিশ্বস্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন ইকবাল। তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলে হাসিনার সাথে অসংখ্য ছবি শেয়ার করা হয়েছিল, তবে হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর সেগুলি সরিয়ে নেওয়া হয়।
জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের শীর্ষ ২০ অর্থদাতার মধ্যে ইকবাল আহমেদও একজন। সিমার্ক গ্রুপের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে, যেখানে মাছ রপ্তানির আড়ালে চোরাচালান চালানো হত।
এনআরবি ব্যাংক থেকে অতিরিক্ত ভাড়া গ্রহণ করায় ইকবাল আহমেদ ও তাঁর ভাইদের বিরুদ্ধে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছে। নোটিশে বলা হয়েছে, ৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা ফেরত না দিলে ফৌজদারি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইকবাল আহমেদ ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে জরিমানা এবং আজীবন বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। এছাড়া তাঁর বিতর্কিত রাজনৈতিক লেনদেনের কারণে ব্রিটিশ রাজনীতিতে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
এদিকে, ইকবাল আহমেদ ওবীর অর্থপাচার সংক্রান্ত অভিযোগ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ফিন্যানশিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্সের রিপোর্টে বাংলাদেশকে ‘ধূসর তালিকা’ থেকে মুক্ত করার জন্য এই কেলেঙ্কারি দ্রুত বিচারাধীন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এনআরবি ব্যাংক পুনর্গঠনে নিয়োগের বিষয়ে ইকবাল আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
সৌজন্যে - কালের কণ্ঠ।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta