মধুপুরে দুইটি ইটভাটাকে ১১ লাখ টাকা জরিমানা
পণ্য রপ্তানির আড়ালে অর্থপাচারের অভিযোগ এবং পাচার করা অর্থ দিয়ে যুক্তরাজ্যে বিপুল সম্পদ গড়ে তোলার অভিযোগ রয়েছে ইকবাল আহমেদ ওবির বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচিত ছিলেন এই বিতর্কিত ব্যবসায়ী। ক্ষমতার অপব্যবহার করে শেখ হাসিনার ছত্রছায়ায় রাজনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যে গড়ে তোলেন এনআরবি ব্যাংক। দুর্নীতির কারণে ২০১৫ সালে ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি থেকে আজীবন বহিষ্কৃত হয়েছিলেন তিনি। ‘সব কাজের কাজি’ হিসেবে পরিচিত ইকবাল আহমেদকে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে রাখার সিদ্ধান্তে ব্যাংকটির ভবিষ্যত নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে অনাস্থা তৈরি হয়েছে।
জানা যায়, চতুর্থ প্রজন্মের এনআরবি ব্যাংককে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে এবং আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাদের নিয়ন্ত্রণ মুক্ত করতে নতুন পর্ষদ গঠন করা হয়েছে। এই পর্ষদে সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ ওবিকে পুনর্নিযুক্ত করা হয়েছে। নতুন পর্ষদে গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক পরিচালক ফেরদৌস আরা বেগম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক শেখ মো. সেলিম এবং আরও কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
কিছু ব্যাংক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা প্রশ্ন তুলেছেন, কেন ইকবাল আহমেদকে ব্যাংকের শীর্ষ পদে নিয়োগ করা হলো? তাঁরা দাবি করেছেন, ইকবাল এবং তাঁর ভাইদের সম্পদের উৎস খুঁজে বের করে তাঁদের আইনের আওতায় আনা উচিত।
ইকবাল আহমেদ এবং তাঁর ভাই কামাল আহমেদ ও বিলাল আহমেদ এনআরবি ব্যাংকের উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার। তাদের যৌথভাবে বেশ কিছু কোম্পানিতে বিনিয়োগ রয়েছে, যার মধ্যে যুক্তরাজ্যে তাদের একাধিক ব্যবসা রয়েছে।
এই কম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে সিমার্ক পিএলসি, আইবিসিও হোল্ডিংস, এমএআই ইনভেস্টমেন্ট হোল্ডিংস এবং আরও বেশ কিছু রিয়েল এস্টেট ও বিনিয়োগ কোম্পানি। শেখ রেহানাসহ শেখ পরিবারের সদস্যদের নামেও বেশ কিছু কোম্পানিতে বিনিয়োগ রয়েছে।
এছাড়া, বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এর মধ্যে রয়েছে মাছ রপ্তানি ব্যবসা এবং ইলেকট্রনিক্স ও সোনার চোরাচালান।
এনআরবি ব্যাংক ১৮ ফেব্রুয়ারি ইকবাল আহমেদ, কামাল আহমেদ এবং বিলাল আহমেদকে লিগ্যাল নোটিশ দেয়। নোটিশে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত ভাড়া বাবদ ব্যাংক থেকে নেওয়া চার কোটি ৫১ লাখ টাকা ফেরত না দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়া, ইকবাল আহমেদ ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সে অনিয়মের কারণে ২ লাখ পাউন্ড গায়েব করেছিলেন, পরে আদালতে মামলা হারান এবং পাঁচ লাখ পাউন্ড জরিমানা ও আজীবন বহিষ্কৃত হন।
তিনি ব্রিটেনের কনজারভেটিভ পার্টির গোপন দাতা হিসেবেও বিতর্কিত হয়েছেন।
ইকবাল আহমেদের অর্থপাচারের অভিযোগ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ফিন্যানশিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্সের রিপোর্টে বাংলাদেশকে ‘ধূসর তালিকা’ থেকে মুক্ত করতে ইকবালের কেলেঙ্কারি দ্রুত বিচারাধীন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, অর্থপাচার এবং ব্যাংকিং খাতের সংস্কার চলমান থাকাকালীন বিতর্কিত ব্যক্তিদের ব্যাংক শীর্ষ পদে রাখা বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের সুনির্দিষ্ট সংস্কারে বাধা সৃষ্টি করবে।
তবে, ইকবাল আহমেদ ওবিইের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। এনআরবি ব্যাংকের সচিব রেজাউল করিমকে ফোন করা হলে জনসংযোগ বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়, তবে জনসংযোগ প্রধানকে পাওয়া যায়নি।
সৌজন্যে - কালের কণ্ঠ।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta