জুলাই অভ্যুত্থানে ৫ হাজার মানুষ হত্যার হুমকি, পবিপ্রবি শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত
জুলাই আন্দোলন চলাকালীন সময়ে ৫ হাজার ছাত্র হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, তাদের হল থেকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়ার ঘটনায় পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) বিতর্কিত শিক্ষক অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসুকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ইকতিয়ার উদ্দীন স্বাক্ষরিত একটি অফিস আদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীর সাধারণ আচরণ ও শৃঙ্খলা বিধি ২(ছ) ধারার লঙ্ঘন হওয়ায় তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। তাকে লিখিতভাবে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে কেন স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে না তার কারণ জানাতে বলা হয়েছে।
অফিস আদেশে বলা হয়, “অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসু, জুলাই ২০২৪ বিপ্লবের সময় প্রক্টরের দায়িত্ব পালনকালে আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের ৫০০০ ছাত্র হত্যার হুমকি দেন, যা বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম ও গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয় এবং জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এছাড়াও তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং হল থেকে বের করে দেন, পাশাপাশি ডিজিএফআই ও এনএসআইয়ের রিপোর্টের কথা বলে হুমকি দেন।”
এ কারণে তাকে চাকরিতে বহাল রাখা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে বিবেচিত হওয়ায় এই আদেশ জারি করা হয়। যথাযথ জবাব না দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বরখাস্তের সময়ে তিনি সরকারি ও পবিপ্রবি বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা পাবেন।
জানা যায়, জুলাই আন্দোলন চলাকালে এম. কেরামত আলী হলে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দিতে গিয়ে অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসু শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “বাংলাদেশের সরকার ক্ষমতা ছাড়বে না, যদি আরও ৫ হাজার মানুষ মারা যায়, তবুও সরকার কিছু ভাববে না।”
শিক্ষার্থীরা হল ত্যাগ করতে অস্বীকার করলে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের দিকে তেড়ে যান এবং শিক্ষার্থীদের আর্থিক সমস্যা নিয়ে খোঁড়া যুক্তির কথা বলেন। পরবর্তীতে তার এসব বক্তব্যের অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা হয় এবং শিক্ষার্থীরা তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। বিভিন্ন সময়ে তার বিরুদ্ধে অযাচিতভাবে ফেল করানো, নম্বর কম দেওয়া ও অপমান করার অভিযোগ ওঠে।
প্রসঙ্গত, জুলাই আন্দোলন চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে ৪ আগস্ট তাকে প্রক্টর পদ থেকে অপসারণ করা হয় এবং পরবর্তীতে তাকে রেজিস্ট্রার পদ থেকেও অপসারণ করা হয়।
বিআরইউ
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta