গর্ত থেকে বেরিয়ে এল আওয়ামী লীগ, নেতাদের নতুন নির্দেশনা দিলো।
গণঅভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ এখন আবার গর্ত থেকে মাথা তুলে যাচ্ছে। আত্মগোপনে থাকা দলের নেতাকর্মীরা দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে আবারও সক্রিয় হতে চেষ্টা করছে। তাদের নতুন পরিকল্পনা দেশের বিভিন্ন এলাকায় অরাজকতা সৃষ্টি করার। এসব কাজ বাস্তবায়নের জন্য গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি তার একটি অডিও রেকর্ড সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, যেখানে তিনি নিজ কর্মী-সমর্থকদের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন।
এমন পরিস্থিতিতে, জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানকে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতারা এই রেকর্ড ভালোভাবে নিচ্ছেন না। তারা দাবি করছেন, আত্মগোপনে থাকা ফ্যাসিস্টরা দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরির জন্য নতুন ষড়যন্ত্র করছে। তাদের এসব কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে সবাইকে একযোগভাবে লড়াই করতে হবে।
জাহাঙ্গীর আলমের ১১ মিনিট ৯ সেকেন্ডের অডিও রেকর্ডে শোনা যায়, তিনি বলেন, "পৃথিবীর কোনো শক্তি আমাদের ঘরবাড়ি গুছিয়ে দিতে পারবে না। আমাদের নেতা শেখ হাসিনা তার কাজ করছেন, আমাদের কাজ আমাদেরই করতে হবে। আপনাদের কী করতে হবে, তা ২৪ ঘণ্টা আগেই জানিয়ে দেওয়া হবে।" তিনি আরও বলেন, "শকুনরা দেশ দখল করছে। আমাদের প্রধানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সবাইকে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে।"
তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর ১ কোটি ৭২ লাখ নেতার মধ্যে ৩৬ লাখ নেতা ছাত্রলীগের অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু কেন তা হয়নি, সবাই জানেন। এখন নিজের ওয়ার্ডে অবস্থান তৈরি করতে হবে, তাহলে সারা দেশে আমাদের অবস্থান দৃঢ় হবে।
এদিকে, জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণ ছাত্রনেতারা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী রাজনৈতিক দল, যা দেশকে সংকটের দিকে ঠেলে দিতে চাচ্ছে। পালিয়ে থাকা নেতাদের নির্দেশনা দেশের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য এবং তাদের এসব ষড়যন্ত্র একত্রে প্রতিহত করতে হবে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব মুশফিক উস সালেহীন বলেছেন, "এরা নানা ষড়যন্ত্রে জড়িত। আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে এসব মোকাবিলা করতে হবে, না হলে তারা অপরাধ চালিয়ে যাবে এবং দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করবে।"
এদিকে, ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে গেছেন এবং বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। তার পর থেকেই দলটি বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে নেতাকর্মীদের নতুন নির্দেশনা দিচ্ছে। গতকাল রবিবার আওয়ামী লীগ প্রথমবার কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল, কিন্তু সেটি ব্যর্থ হয়েছে।
সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন, "আওয়ামী লীগ আগামী ২-৩ মাসের মধ্যে রাজনীতিতে পূর্ণাঙ্গভাবে ফিরে আসবে।" দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, "শেখ হাসিনাসহ দলের নেতারা তৃণমূল নেতাদের সাথে যোগাযোগ শুরু করেছেন।"
রাজনৈতিক বিশ্লেষক জোবাইদা নাসরীন জানিয়েছেন, "শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই, তাই তিনি তার দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে বৈঠক করতে পারেন। তবে দেখা হবে, বৈঠকে শেখ হাসিনা কী বার্তা দেন।"
বাঁধন/সিইচা/সাএ
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta