লালমনিরহাটে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত শতাধিক ঘরবাড়ি, ব্যাপক তছনছ
লালমনিরহাটে কালবৈশাখী ঝড়ে শতাধিক ঘরবাড়ি ও গাছপালা উড়ে গেছে। পাঁচটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঝোড়ো হাওয়ার ফলে ঘরবাড়ির পাশাপাশি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বজ্রপাতে আহত হয়েছেন ৭ জন শ্রমিক।
তাদের মধ্যে দুজন হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। আহত শ্রমিকরা কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন, এ সময় বজ্রপাতের শিকার হন বলে জানান ওসি মাহমুদুন্নবী।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে সদর, আদীতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঝড় বয়ে যায়। ৩০ মিনিট ধরে চলতে থাকে ঝোড়ো হাওয়া ও শিলাবৃষ্টি।
কালবৈশাখী ঝড়ের ফলে শত শত বসতবাড়ি, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ভেঙে যায় এবং প্রায় হাজার বিঘা জমির ফসল নষ্ট হয়ে যায়। মোট ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা হতে পারে।
হাতীবান্ধা উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। সিন্দুর্ণা, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের শতাধিক ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ে। কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় হাজার হাজার বিঘা জমির ভুট্টা ও ধান নষ্ট হয়ে গেছে।
কালীগঞ্জ উপজেলার দলগ্রাম ইউনিয়নের গেগড়া এলাকার সামিউল ইসলাম, ভোটমারী এলাকার ফরহাদ হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, মমেনা বেগমসহ বিভিন্ন এলাকার বেশ কয়েকটি বাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তরা খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছে।
হাতীবান্ধা উপজেলার পারুলিয়া স্কুল এন্ড কলেজের চারটি ক্লাসরুম ভেঙে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ ‘প্রায় ১০ লক্ষ টাকা’ বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
এখন পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারিভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়নি, তবে ধারণা করা হচ্ছে ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা হতে পারে। হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম মিঞা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা উত্তম কুমার নন্দী ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে তালিকা তৈরি করছেন।
পারুলিয়া স্কুল এন্ড কলেজের সিনিয়র শিক্ষক শহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, ঝড়ের কারণে মানুষ ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। ঘরবাড়ি ভেঙে যাওয়ার পাশাপাশি ভুট্টা ও ইরি বোরো ধানেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে জরিপ করছেন। জরিপ শেষ হলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।
হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম মিঞা জানান, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী শতাধিক বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বেশ কিছু ফসলও নষ্ট হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে এবং জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হবে।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta