পাগলা মসজিদের দানবাক্সে পাওয়া গেছে ৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা
কিশোরগঞ্জের প্রাচীন পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে এবার ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা পাওয়া গেছে। এর পাশাপাশি পাওয়া গেছে বিদেশি মুদ্রা, সোনা এবং রুপা। এই অর্থ ৪ মাস ১২ দিনে জমা হয়েছে মসজিদটির দানবাক্সে।
শনিবার দিনভর গণনা শেষে বিকালে এ পরিমাণ অর্থ ঘোষণা করেন পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান।
শনিবার সকাল ৭টায় ১০টি দানবাক্স এবং ১টি ট্রাঙ্ক খুলে তার সব অর্থ ২৮টি বস্তায় ভরা হয়। এরপর সেগুলো মসজিদের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে গণনা শুরু হয়। গণনা চলে বিকাল ৫টা পর্যন্ত।
পাগলা মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গণনায় অংশ নিয়েছিলেন পাগলা মসজিদ সংলগ্ন মাদ্রাসার ১৩০ জন ছাত্র, আল-জামিয়াতুল ইমদাদিয়া মাদ্রাসার ১৫৫ জন ছাত্র, মসজিদের ৩৬ জন স্টাফ, রূপালী ব্যাংকের ৭০ জন কর্মী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় অর্ধশতাধিক সদস্য।
জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান জানান, পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্সের খরচ চলাতে অবশিষ্ট টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হয়। এই অর্থ জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা এবং এতিমখানায় দেওয়া হয়, পাশাপাশি অসহায় এবং কঠিন রোগে আক্রান্তদের সাহায্য করা হয়। তিনি আরো জানান, ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের অ্যাকাউন্টে বর্তমানে ৮০ কোটি ৭৫ লাখ ৭৩ হাজার ৫৭৬ টাকা জমা রয়েছে।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী জানান, দানবাক্স খোলা থেকে শুরু করে গণনা এবং নিরাপদে ব্যাংকে টাকা পৌঁছানো পর্যন্ত নিরাপত্তার সব দায়িত্ব তার পুলিশ বাহিনী পালন করেছে।
এর আগে গত বছরের ৩০ নভেম্বর সকালেও মসজিদের ১০টি দানবাক্স এবং ১টি ট্রাঙ্ক খুলে ২৯ বস্তা টাকা পাওয়া গিয়েছিল। গণনার পর টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা, সাথেই পাওয়া গিয়েছিল বিদেশি মুদ্রা, সোনা ও রুপা। তখন তিন মাস ১৩ দিনে সর্বোচ্চ পরিমাণ অর্থ পাওয়া গিয়েছিল।
মসজিদ কমিটি জানিয়েছে, ছয় তলাবিশিষ্ট আকর্ষণীয় পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য একটি মেগা প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। এতে মসজিদ, মাদ্রাসা ও অন্যান্য সুবিধা থাকবে, যেখানে একসঙ্গে ৫০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। পাঁচ হাজার নারীর জন্যও আলাদা নামাজের ব্যবস্থা থাকবে। এই প্রকল্পের জন্য ইতোমধ্যে পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নকশা চূড়ান্ত হলে দরপত্র আহ্বান করে কাজ শুরু হবে। প্রাথমিক খরচ হিসেব করা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা।
কিশোরগঞ্জের হারুয়া এলাকায় নরসুন্দার তীরে প্রায় ১০ শতাংশ জমির ওপর অবস্থিত ঐতিহাসিক এই পাগলা মসজিদ। সম্প্রসারণের পর মসজিদের জমির পরিমাণ ৩ একর ৮৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta