মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামীকাল বুধবারকে ‘লিবারেশান ডে’ বা ‘মুক্তি দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন। ওইদিন তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নতুন শুল্ক আরোপের কথা জানাবেন।

ট্রাম্পের এই ঘোষণার পূর্বে বিশ্বজুড়ে শেয়ারবাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। শুল্ক বৃদ্ধির কারণে বড় বড় বহুজাতিক কোম্পানির বিক্রি ও লাভে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, এমন আশঙ্কায় তাদের শেয়ারের দাম কমছে।

অন্যদিকে, বিনিয়োগকারীরা এই অস্থিরতা থেকে রক্ষা পেতে সোনায় বিনিয়োগ করতে শুরু করেছেন, যেটি ‘নিরাপদ স্বর্গ’ হিসেবে পরিচিত। এই প্রবণতা বাজারে মন্দার সংকেত হিসেবে দেখা যাচ্ছে।

ট্রাম্পের ‌‘লিবারেশান ডে’ নিয়ে শেয়ারবাজারে অনিশ্চয়তা বাড়ছে। এশিয়া, ইউরোপ, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও শেয়ারবাজারের সূচক পড়ছে।

৩১ মার্চ সোমবার বিশ্বব্যাপী বড় শেয়ারবাজারগুলোতে দরপতন দেখা গেছে।

এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক প্রায় শূন্য দশমিক পাঁচ শতাংশ কমেছে। ন্যাসডাক সূচক এক দশমিক চার শতাংশ নিচে নেমেছে। স্পষ্টত, শুল্ক ঘোষণা হওয়ার আগে বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকি নিতে চাইছেন না।

স্বর্ণের দাম বর্তমানে প্রতি আউন্সে তিন হাজার ১৫০ মার্কিন ডলার ছুঁয়েছে, যা বাজারের অস্থিরতা এবং বাণিজ্যিক উত্তেজনার ফল।

জাপানের নিককেই-২২৫ সূচক চার শতাংশ নিচে নেমেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার কোসপি তিন শতাংশ এবং ফ্রান্সের সিএসি ৪০ প্রায় দেড় শতাংশ কমেছে।

বিশেষ করে, জাপানের টোকিও স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক ৪ শতাংশ নিচে নেমেছে, যা এশিয়া ও ইউরোপের শেয়ারবাজারেও পতনের কারণ হয়েছে।

কী হতে চলেছে বুধবার?

ট্রাম্প ২ এপ্রিল ‘লিবারেশান ডে’ হিসেবে শুল্ক পরিকল্পনা ঘোষণা করতে যাচ্ছেন। কিছু বিশেষজ্ঞ ধারণা করছেন, তিনি ‘রেসিপ্রোকাল’ বা সমমুল্যে শুল্ক আরোপ করবেন।

৩০ মার্চ রবিবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, নতুন শুল্ক বিশ্বের সব দেশের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। হোয়াইট হাউসের দাবি, বিদেশি পণ্যগুলোর উপর নতুন শুল্কের কারণে আমেরিকা প্রায় ১০ হাজার কোটি ডলার লাভ করবে।

বিশ্ব মন্দার আশঙ্কা উড়িয়ে দেননি ট্রাম্প

৩০ মার্চ ফক্স নিউজ চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বিশ্ব মন্দার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি। বিশেষজ্ঞদের মতে, তার এই বক্তব্যের প্রভাব সোমবারের শেয়ারবাজারে পড়েছে।

বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার সম্ভাবনা নিয়ে ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি আগে থেকে কিছু জানাতে পছন্দ করি না। আমরা বড় কিছু ঘোষণা করতে যাচ্ছি, যার কিছু পরিবর্তন আসবে, তবে সময় লাগবে।’

এবার ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী, রপ্তানি শুল্ক আরও কড়া হতে পারে।

চীনের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প। কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। এছাড়া ইউরোপ, ভারত এবং জাপানের উপরও শুল্ক চাপানোর পরিকল্পনা রয়েছে, যা জার্মান ওয়াইন ব্যবসায়ীদের উদ্বেগের কারণ হয়েছে।

সূত্র : এপি।