মিয়ানমারের ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত এলাকায় চীনা ত্রাণ সাহায্য বহনকারী গাড়িবহরের দিকে সতর্কতামূলক গুলি চালিয়েছে দেশটির জান্তা সেনারা। মঙ্গলবার রাতে চীনা রেড ক্রসের ত্রাণ বহরের দিকে গুলি চালানো হয়েছে বলে জানায় বেইজিং। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

মিয়ানমারের ভয়াবহ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা ত্রাণ পাঠাচ্ছে, তবে দেশটির সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে বিদ্রোহী তৎপরতার কারণে ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

২০২০ সালের জাতীয় নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে। ওই নির্বাচনে গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির দল এনএলডি বিপুল ভোটে জয়লাভ করলেও জান্তা সরকার তা প্রত্যাখ্যান করে।

অভ্যুত্থানের পর থেকে জান্তা বাহিনী বিরোধীদের বিরুদ্ধে দমন অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। অং সান সু চিকে গৃহবন্দি করা হয়, যার পর থেকে দেশজুড়ে জান্তা বিরোধী বিক্ষোভ চলছে। গৃহযুদ্ধের ফলে সরকার মানুষের মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা, খাদ্য ও ওষুধের চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।

ভয়াবহ ভূমিকম্প: প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞ
গত শুক্রবার দুপুরের দিকে মিয়ানমারে শতাব্দীর ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে, যাতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এবং আহত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। খবর রয়টার্সের।

বুধবার মিয়ানমারের জান্তা সরকারের মুখপাত্র জ্য মিন তুন বলেন, চীনা রেড ক্রস সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে ত্রাণ নিয়ে গিয়েছিল, তবে সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়নি। গাড়িবহরে স্থানীয় কিছু যানবাহনও ছিল, যা দেখে নিরাপত্তা বাহিনী আকাশে ফাঁকা গুলি ছুড়ে সতর্কতা দেয়।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন বেইজিংয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, "মিয়ানমারের জান্তা সৈন্যদের গুলির পরেও সহায়তাবাহী দল নিরাপদে ত্রাণ সরবরাহ করেছে। আমরা মিয়ানমারের সকল পক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যাতে ত্রাণ সরবরাহ ও উদ্ধার কার্যক্রম বাধাহীনভাবে চলতে পারে।"

মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, গত শুক্রবারের ভূমিকম্পে ২,৮৮৬ জন নিহত এবং ৪,৬৩৯ জন আহত হয়েছেন।

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ জানায়, স্যাগাইং অঞ্চলের অধিকাংশ এলাকা বিদ্রোহীদের দখলে থাকায় ত্রাণ কার্যক্রম সেখানে চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

সূত্রঃ রয়টার্স