যশোরে বেয়াইন আটক, চোখ উপড়ানো বেয়াইয়ের মৃত্যু
যশোরে বেয়াইনের হামলায় গুরুতর আহত সিরাজুল ইসলাম ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তার ছেলে হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগ রয়েছে, ২৯ মার্চ দুপুরে শহরতলীর বাহাদুরপুর জেস গার্ডেনের পেছনে হাসি বেগম ও তার সহযোগীরা সিরাজুলকে মারধর করেন। এতে তার একটি চোখ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উল্লেখ্য, সিরাজুলের ছেলের সঙ্গে হাসির মেয়ের বিয়ে হয়েছিল, ফলে তাদের মধ্যে বেয়াইন-বেয়াই সম্পর্ক ছিল।
আহত অবস্থায় সিরাজুলকে প্রথমে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। অভিযুক্ত হাসি বেগম বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, শনিবার দুপুরে সিরাজুল তার বেয়াইন হাসির বাড়িতে গেলে কিছুক্ষণ পর হঠাৎ মারধরের আওয়াজ পাওয়া যায়। পরে দেখা যায়, দুজন লোহার পাইপ দিয়ে একে অপরকে আঘাত করছেন। এ সময় সিরাজুলের একটি চোখ গুরুতরভাবে জখম হয়, আর হাসির শরীরেও আঘাতের চিহ্ন ছিল।
পরে স্থানীয়রা তাদের আলাদা করে এবং সিরাজুলকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় হাসি বেগম পরবর্তীতে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।
সিরাজুলের পরিবারের দাবি, পূর্ববিরোধের জেরে হাসি, তার মেয়ে মনিকা এবং ভগ্নিপতি শাবল দিয়ে সিরাজুলের শরীরে আঘাত করেন এবং তার চোখ গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
অন্যদিকে, হাসি বেগমের বক্তব্য ভিন্ন। তিনি জানান, সিরাজুল তাকে দীর্ঘদিন ধরে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। এতে তিনি রাজি না হওয়ায় সিরাজুল তাকে আক্রমণ করেন। আত্মরক্ষার সময় ধস্তাধস্তিতে তার চোখে আঘাত লাগে বলে তিনি দাবি করেন।
তবে স্থানীয়দের মতে, সিরাজুল ও হাসির মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল এবং তারা প্রায়ই একসঙ্গে সময় কাটাতেন। ফলে হাসির অভিযোগটি সন্দেহজনক বলে অনেকে মনে করছেন।
কোতোয়ালি থানার ওসি আবুল হাসনাত বলেন, "সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং দেখতে পায় সিরাজুল গুরুতর আহত অবস্থায় রয়েছেন। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। হাসি বেগমকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যায় ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিরাজুল মারা যান।"
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে রোববার (৩০ মার্চ) প্রেসক্লাব যশোরে নিহত সিরাজুলের পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছেন তার ছেলে হাসান।
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta