প্রাচীন মহাবিশ্বের অজ্ঞাত রহস্য উদঘাটন
মহাবিশ্বের উৎপত্তির পর এক সময় চারপাশে ঘন হাইড্রোজেন গ্যাসের চাদরে আবৃত ছিল সবকিছু। তবে, সম্প্রতি জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সংকেত শনাক্ত করেছেন যা মহাজাগতিক অন্ধকার যুগের শেষের দিকে একটি পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়।
জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের মাধ্যমে পাওয়া নতুন একটি ছবিতে ‘GS-z13-1’ নামের একটি ছায়াপথের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেছে। এটি বিগ ব্যাংয়ের মাত্র ৩৩০ মিলিয়ন বছর পরের একটি সময়কাল। বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করছেন, এই ছায়াপথের চারপাশের গ্যাসের কুয়াশা সাফ হয়ে গিয়েছিল, যা মহাবিশ্বের প্রথম স্বচ্ছতা প্রাপ্তির সূচক হতে পারে।
ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রবার্তো মাইওলিনো মন্তব্য করেছেন, এটি মহাবিশ্বের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, কীভাবে প্রথম তারাগুলো শক্তিশালী বিকিরণের মাধ্যমে আশপাশের হাইড্রোজেন গ্যাসকে আয়নিত করে আলো প্রবাহিত হতে সহায়তা করেছিল।
গবেষণায় দেখা গেছে, এই ছায়াপথের চারপাশে প্রায় ৬.৫ লক্ষ আলোকবর্ষ বিস্তৃত একটি বিশাল প্লাজমার বলয় রয়েছে। এটি বোঝায় যে, ছায়াপথটি অত্যন্ত শক্তিশালী বিকিরণ ছড়াচ্ছিল, যার ফলে আশপাশের গ্যাস বিভক্ত হয়ে মহাবিশ্বের প্রথম স্বচ্ছতার দিকে এগিয়ে যেতে শুরু করেছিল।
কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জোরিস উইটস্টক বলেছেন, সংকেতটি এত শক্তিশালী যে এটি অতিরিক্ত বড় এবং উত্তপ্ত তারার উপস্থিতি নির্দেশ করে। সম্ভবত এটি আমাদের পরিচিত নক্ষত্রগুলোর চেয়ে ৩০০ গুণ বড় এবং ১৫ গুণ বেশি উত্তপ্ত।
নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ড. এমা চ্যাপম্যান বলেছেন, এটি আলোর প্রথম সন্ধানের মতো এক যুগান্তকারী আবিষ্কার। এই অনুসন্ধান যদি আরও গভীরভাবে অনুসন্ধান করা যায়, তবে মহাবিশ্বের বিবর্তন সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য প্রকাশ পেতে পারে। গবেষণার ফলাফল সম্প্রতি ‘নেচার’ সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta