আসছে বর্ষায় পানি জমার শঙ্কা
রাজধানীর কমলাপুর-টিটিপাড়া রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে খুঁড়ে রাখা হয়েছে, যার কারণে স্থানীয়দের যাতায়াতে মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। ধুলোর কারণে শ্বাস নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে, তবে বর্ষার মৌসুমে জলজটের আশঙ্কা এলাকায় বাস করা মানুষদের উদ্বিগ্ন করেছে। টিটিপাড়া এলাকার বাসিন্দা মহিউদ্দিন হায়দার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘শুষ্ক মৌসুমে এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে আমাদের প্রচুর কষ্ট হচ্ছে। কাজের গতি খুবই ধীর। এখনই রাস্তা চলাচলের উপযোগী নয়, বর্ষার সময় পানি জমলে পুরো এলাকা সমস্যায় পড়ে যাবে।’
বর্ষা এলেই রাজধানীর দৃশ্যপট বদলে যায়, জলজট একটি প্রতিদিনের সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। রাস্তা খুঁড়ে রেখে সেবা সংস্থাগুলো আরো নতুন সমস্যা তৈরি করে। বর্ষার সময়, এসব রাস্তায় হাঁটু পর্যন্ত পানি জমে যায়। ধানমন্ডি ২৭, মিরপুর, শান্তিনগর, আদাবর এবং বিমানবন্দর সড়কগুলিতে প্রতি বছর জলজটের কারণে মানুষ কষ্ট পায়। এমন কিছু এলাকার জলজটের সমস্যায় কোনো স্থায়ী সমাধান নেই। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা গেছে, কোথাও সড়কের এক পাশ আবার কোথাও মাঝখান দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে খোঁড়া কাজ ফেলে রাখা হয়েছে। কয়েক মাস ধরে সড়কগুলো সংস্কারের কাজ চলছে না। প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে ছোট সড়কগুলো পর্যন্ত একই চিত্র। কিছু সড়ক বালু দিয়ে ভরাট করা হয়েছে, যা বৃষ্টি হলে জনগণের চলাচলে বড় সমস্যা সৃষ্টি করবে।
রাজধানীর ভাটারার নতুন বাজার থেকে ছোলমাইদ ছাপড়া মসজিদ পর্যন্ত রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে খুঁড়ে রাখা হয়েছে। ছোলমাইদের দোকানি আব্বাস আলী বলেন, ‘আধা ঘণ্টা বৃষ্টি হলেই এই রাস্তাগুলিতে হাঁটু পানি জমে যায়। এখন তো বড় বড় গর্ত করে রাখা হয়েছে। বর্ষা আসার আগেই এগুলো ঠিক না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’
প্রতিবছর জলজটের সমস্যার জন্য প্রস্তুতি না নেওয়ায় রাজধানীবাসীকে সমস্যায় পড়তে হয়। শুষ্ক মৌসুমে রাস্তা ঠিক করার কাজের ধীরগতি এবং খাল খননে অগ্রগতি কম হওয়ায় বর্ষার সময় জলজটের সমস্যা তীব্র হয়। জলজট মোকাবিলায় খাল খননে গতিশীলতা আনার জন্য ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনগুলো উদ্যোগ নিয়েছে। ২ ফেব্রুয়ারি ছয়টি খালের সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, মোট ১৯টি খালের সংস্কার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে প্রথম ধাপে ছয়টি খাল সংস্কার করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে ঢাকা উত্তরের বাউনিয়া, কড়াইল, রূপনগর এবং বেগুনবাড়ী খাল এবং ঢাকা দক্ষিণের মান্ডা ও কালুনগর খাল। পরবর্তী সময়ে অন্যান্য খালগুলোরও সংস্কার কাজ চলবে।
এই বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)-এর প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘পয়লা বৈশাখের আগে যেসব রাস্তা কাটা হচ্ছে, সেগুলোর কাজ শেষ করা হবে। আমাদের কর্মী সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম, তবে রাতদিন কাজ চলছে। আমরা পরিবর্তন আনতে এসেছি, বসে থাকার জন্য নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘কিছু কিছু জায়গায় জলাবদ্ধতা কমবে না, তবে বেশিরভাগ জায়গায় তা কমবে। ঢাকার অবকাঠামো পরিকল্পনাবিহীন হওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। ঢাকার সিটি পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে ঢালু, মাঝখানে তিমি মাছের পেটের মতো। খালগুলো পূর্ব-পশ্চিমমুখী হওয়া উচিত ছিল।’
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta