চৌজা পুরাতন মসজিদ
নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলায় অবস্থিত চৌজা পুরাকীর্তি মসজিদটি দেশের প্রাচীন এবং ক্ষুদ্রতম মসজিদগুলোর মধ্যে একটি। এই মসজিদটি মান্দা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের চৌজা গ্রামে অবস্থিত। জেলা শহর থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৫২ কিলোমিটার। ২০০২ সালের ১৯ জুন বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় মসজিদটিকে ‘সংরক্ষিত পুরাকীর্তি’ হিসেবে ঘোষণা করে।
এই মসজিদে একসাথে সাতজন মুসল্লি নামাজ পড়তে পারেন, ইমামসহ। তবে ভিতরে মুসল্লি পর্যাপ্ত জায়গা না হওয়ায় বাইরে অস্থায়ীভাবে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মসজিদটি আয়তনে ১৫ ফিট দীর্ঘ এবং ১৫ ফিট চওড়া। মসজিদের দেয়ালের পুরুত্ব প্রায় ৩ ফিট ৯ ইঞ্চি, মূল দরজার উচ্চতা ৫ ফিট এবং উত্তর ও দক্ষিণ পাশের দরজাগুলোর উচ্চতা ৪ ফিট ৯ ইঞ্চি। এটি একটি এককক্ষবিশিষ্ট ছোট মসজিদ। এই মসজিদে একটি গম্বুজ রয়েছে এবং তিনটি খিলান দরজা, পাশাপাশি চারটি বুরুজ বা মিনার রয়েছে। মসজিদের প্রতিটি দরজা এবং মেহরাবের উপরে দুটি করে মোট আটটি ছোট মিনার রয়েছে। মসজিদের খিলান দরজাগুলোর ওপর চালার আকৃতির ডিজাইন রয়েছে। প্রতিটি বুরুজ বা মিনারের নিচের অংশে কলস আকৃতির ডিজাইন রয়েছে। মসজিদের প্রবেশদ্বারের ওপরে পাঁচটি বাঁশের কাঠি টাঙানো রয়েছে, যা অতীতে নামাজের ওয়াক্তের হিসাব রাখার কাজে ব্যবহৃত হতো। মসজিদটির নির্মাণকাল সম্পর্কে কোনো শিলালিপি না থাকলেও ধারণা করা হয়, এটি অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ ভাগে নির্মিত হয়েছিল।
মসজিদের ইমাম হাফেজ রায়হান ম ল জানান, চৌজা পুরাকীর্তি মসজিদে জুমার নামাজসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা হয়। অতীতে মসজিদটির কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, যা ২০০৪ সালে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মাধ্যমে সংস্কার করা হয়। বর্তমানে মসজিদটির সৌন্দর্য শ্যাওলা ধরার কারণে কিছুটা নষ্ট হচ্ছে। এছাড়া মসজিদে অজু এবং শৌচাগারের ব্যবস্থা না থাকায় মুসল্লিদের বেশ কিছু সমস্যা হয়। মসজিদটির দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, নওগাঁর পাহাড়পুর ঐতিহাসিক বৌদ্ধবিহারের কাস্টোডিয়ান ফজলুল করিম আরজু বলেন, ‘চৌজা মসজিদ একটি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি। আমি দ্রুত পরিদর্শন করব এবং যদি কোনো সংস্কারের প্রয়োজন হয়, তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।’
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta