ফারুক: সংসদে যান, সেখানেই হবে মূল সংস্কার
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের প্রতি বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, আপনি গণপরিষদ ও উপজেলা নির্বাচন এগুলো বাদ দিন। জনপ্রিয়তা যাচাই করতে হলে গ্রামে-গঞ্জে গিয়ে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। নির্বাচনের দিন নির্ধারিত হলে প্রার্থী দিন। সংসদে যান, সেখানে আসল সংস্কার হবে। ভোটকেন্দ্রের সংস্কারের পাশাপাশি, যারা ভোট নেবে তাদের যেন হাসিনার মতো রাতের অন্ধকারে ভোট চুরি না করতে পারে সে ব্যবস্থা করুন।
শনিবার (১৫ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সামাজিক পরিবেশ ও মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার আয়োজনে ‘স্থিতিশীল রাষ্ট্র গড়তে জাতীয় নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
এনসিপি’র উদ্দেশে ফারুক বলেন, আপনারা তো আমার দলের নেতা তারেক রহমানের মতোই সংগ্রামী নেতা। নোবেল বিজয়ীকে সরকারে বসিয়ে দিয়ে একটি নির্বাচনের অপেক্ষা করছিলেন, কিন্তু সেই সময় মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দীনের মতো ষড়যন্ত্র শুরু হতে পারে বলে মনে হয়।
তিনি আরও বলেন, এই আন্দোলনকে হাজার হাজার মানুষ সমর্থন করেছে শুধু একটি কারণে, তা হলো নির্বাচন। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা যে নির্বাচন শব্দটি বাংলাদেশ থেকে মুছে দিয়েছেন, সেই নির্বাচনের জন্য জীবন দিয়েছেন খোকন-মুগ্ধরা। এখন, নির্বাচন নিয়ে আপনারা নতুন দল তৈরি করে আবার গণপরিষদ বলছেন।
ফারুক বলেন, গণপরিষদ, উপজেলা, ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, জেলা পরিষদ এসব কেন আসছে? কারণ জনগণ আমাদের বলে, আরেকটি বড় ষড়যন্ত্র দেশে প্রস্তুত হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সাঈদ-মুগ্ধদের রক্তে অর্জিত দ্বিতীয় স্বাধীনতাকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা চলছে।
তিনি বলেন, আমার নেতা তারেক রহমানের ইচ্ছা এবং দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ চায় নিজের ভোট নিজে দেবে। ৯১ সালের মতো সুষ্ঠু ভোট হবে। আমরা রাজনৈতিক দলগুলো হাসিনার রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে ১৬ বছরের মধ্যে ৯ বছর যারা জেলে ছিল, গুলি খেয়ে হাসপাতালে ছিল, গুম-খুন হয়েছে, তাদের ইচ্ছা এই নোবেল বিজয়ী হাতেই একটি সুষ্ঠু নির্বাচন।
বিএনপির চেয়ারপারসনের এই উপদেষ্টা বলেন, ৫ আগস্টের আগে যারা ব্যবসায়ী হয়ে শেখ হাসিনার গুণগান গেয়েছিল, তারা এখন কোথায়? জনগণ জানতে চায়। শুধু স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগে কিছু হবে না, সমস্যার সমাধান একমাত্র জনপ্রতিনিধি সরকারের মাধ্যমে সম্ভব। ভোট সুষ্ঠু হলে সমস্যার সমাধান হবে। যারা ১৬ বছর ধরে হাসিনার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে আন্দোলন সংগ্রাম করেছে, তাদের রক্ত শপথ করে বলছি- নির্বাচন দিন, না হলে মানুষ আপনার কাছ থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করবে।
আলোচনা সভায় সরকারের উদ্দেশে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ বলেন, নির্বাচন বন্ধ করতে সংস্কারের কথা বলা ভুল। সমস্ত ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে নির্বাচন করতে হবে। যে নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা দেশকে একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।
তিনি বলেন, ছাত্রদের দাবি ছিল কোটা সংস্কার, আর তারেক রহমানের দাবি ছিল, যতক্ষণ পর্যন্ত স্বৈরাচারী হাসিনার পতন না হবে, ততক্ষণ আন্দোলন চলবে। এক সময় ছাত্ররা পুলিশের সঙ্গে আপস-ফর্মুলায় চলে গিয়েছিল, কিন্তু তারেক রহমান আপস করেননি। তার নেতৃত্বে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কারণে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
আলোচনা সভায় সামাজিক পরিবেশ ও মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার চেয়ারম্যান লায়ন এইচ এম ইব্রাহিম ভূঁইয়া সভাপতিত্বে এবং দৈনিক ভোরের ডাকের চীফ রিপোর্টার সুজন দে-এর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় হিন্দু মহাজোটের সহ-সভাপতি তরুণ কুমার ঘোষ, অ্যাডভোকেট আবু সুফিয়ান, এসএম জহিরুল ইসলাম, সামির হোসেন সোহাগ, রেজাউল করিম ভূঁইয়াসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম
প্রকাশিত: | By Symul Kabir Pranta